মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৩ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

বাংলাদেশে ঘুলজা গণহত্যা বার্ষিকী পালন

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:১৯

বিশ্বজুড়ে উইঘুরেরা প্রতি বছর ৫ ফেব্রুয়ারিকে ঘুলজা গণহত্যার বার্ষিকী হিসেবে পালন করে। ১৯৯৭ সালের এই দিনে, চীনা বাহিনী ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা এবং সমান অধিকারের দাবিতে জিনজিয়াং উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের একটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সময় হাজার হাজার নিরীহ উইঘুরদের হত্যা ও বন্দী করে।

বিক্ষোভকারীরা উইঘুর সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক প্রান্তিকতার দিকে পরিচালিত জাতিগত বৈষম্যের অবসানের দাবি জানায়। বিভিন্ন এনজিও এবং সুশীল সমাজ, ওলামা এবং অন্যান্য সংগঠন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির মাধ্যমে চীনের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে থেকে উইঘুর মুসলিম ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের ন্যায্য দাবিকে সমর্থন করার জন্য ঘুলজা গণহত্যার ২৬তম বার্ষিকী পালন করে। 

গাজীপুর 

উইঘুর মুসলমানদের বিরুদ্ধে চীনা নৃশংসতা ও চলমান গণহত্যা তুলে ধরে গাজীপুরে ঘুলজা গণহত্যার ২৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ বিক্ষোভের আয়োজন করে সঞ্চয়ন নাগরিক সমাজ। বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন (১) মাওলানা আবদুল আলিম সাইফী, মোহাতামিম সালনা দারুস স্লাম ইসলামিয়া মাদ্রাসা, গাজীপুর মহানগর (২) হাফেজ মাওলানা আলী উল্লাহ, পরিচালক, সালনা ইসলামিয়া মাদ্রাসা (৩) মাওলানা আবদুল্লাহ সোহেলী, মোহতামিম আয়েশা সিদ্দিক (রহ.) মহিলা মাদ্রাসা, গাজীপুর (৪) মাওলানা রশিদ জলাবাদী, মোহতামিম দিগিরছলে দারুল উলূম মাদ্রাসা।

বিক্ষোভকারীরা উইঘুর মুসলমানদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং সংখ্যালঘু ইস্যুতে চীনের দ্বারা নিরীহ উইঘুরদের ওপর গণহত্যা চালানোর তীব্র নিন্দা জানায়। বিক্ষোভকারীরা এ সময় উইঘুরদের ওপর চীনা নৃশংসতার ঘটনা তুলে ধরে ব্যানার ও পোস্টার বহন করে।

ঢাকা 

বাংলাদেশ সম্প্রীতি সংসদ (বাসস) ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সাইকেল শোভাযাত্রা ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সাইকেল র‌্যালিটি নিকুঞ্জ পুলিশ প্লাজা থেকে শুরু হয়ে গুলশান এলাকা দিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতাল হয়ে পুলিশ প্লাজায় গিয়ে শেষ হয়। বাসস এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তৌফিক আহমেদ তাফসিরের সভাপতিত্বে তারা পুলিশ প্লাজায় সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা করেন। 

তিনি বলেন, যে ১৯৯৭ সালের এই দিনে, ঘুলজায় উইঘুর বিক্ষোভকারীরা একটি অহিংস প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিল যাতে চীন সরকার কর্তৃক শহরে ধর্মীয় দমন-পীড়ন এবং জাতিগত বৈষম্যের অবসানের আহ্বান জানানো হয়। বাংলাদেশের মুসলমানরা উইঘুর মুসলমানদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।

এতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। ইসলামী প্রগতিশীল জনতা ফ্রন্ট সকাল ১১.৩০ মিনিটে কনফারেন্স রুম-৩, আবদুস সালাম হল, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতা আমীর মাওলানা আবু জাফর কাশেমী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নেতা মাওলানা শহীদুল ইসলাম আনসারীসহ ১২০-১৫০ জন অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ মোহাজির ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কমিটি (বিএমডব্লিউডিসি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। অংশগ্রহণকারীরা পোস্টার, প্ল্যাকার্ড হাতে ঘুলজা হত্যাকাণ্ড তুলে ধরেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। বিএমডব্লিউডিসির একটি দল সন্ধ্যায় চীন দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিতে যায়।

খুলনা 

খুলনা মহানগর ছাত্র সংসদ (কেএমএসইউ) খুলনার রয়্যাল মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। কেএমএসইউ এর সাধারণ সম্পাদক জয় বৈদ্য, সভাপতি এবং অন্যরা এক কণ্ঠে জানান যে ছাত্র ইউনিয়ন উইঘুরদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে। উইঘুরদের সমর্থন চিত্রিত ব্যানার এবং পোস্টার প্রদর্শন করা হয় এবং লিফলেটও বিতরণ করা হয়। 

রাজশাহী 

বাংলাদেশ সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বিএসএএফ) সংখ্যালঘু ও উইঘুরদের প্রতি চীনের অমানবিক আচরণ তুলে ধরতে (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর সাহেব বাজার, জিরো পয়েন্টে একটি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের পোস্টার ও ব্যানার বহন করতে দেখা যায়। 

চট্টগ্রাম 

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট। অনুষ্ঠানে মাওলানা নুরুল ইসলাম (বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের চট্টগ্রাম দক্ষিণ শাখার সভাপতি), মাওলানা এম এ মতিন (বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান) এবং এস ইউ এম আবদুস সামাদসহ (বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক) প্রায় ৫০০ জন উপস্থিত ছিলেন।

ইত্তেফাক/এএএম