বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছে, সিরিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোরে প্রথম ভূমিকম্প আঘাত হানার পর থেকে চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম ধাক্কার পর দ্বিতীয় শক্তিশালী কম্পন আরও উত্তরে আঘাত হানে। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। উদ্ধারকারীরা হিমশীতল ঠাণ্ডা ও তুষারপাতের মধ্যে ধ্বংসস্তূপের পাহাড়ের মধ্যে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
তুরস্কের এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে বিশ্বের অনেক দেশ এগিয়ে এসেছে। অনেক দেশ বিশেষজ্ঞ দল ও বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করার চেষ্টা করছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, তুরস্কের গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
ভূমিকম্পবিদরা জানিয়েছেন, প্রথম ভূমিকম্পটি তুরস্কে আঘাত হানার সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। জীবিতরা জানিয়েছেন, কম্পন থামতে দুই মিনিট সময় লেগেছে। দ্বিতীয় ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৫। এর কেন্দ্র ছিল কাহরামানমারাস প্রদেশের এলবিস্তান জেলায়। ভূমিকম্পের আশপাশে আফটারশক অনুভূত হয়েছে।
গতকাল দিনভর তুরস্ক ও সিরিয়া উভয় দেশেই মৃত ও আহতের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এই সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কারণ উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনেক মানুষকে খুঁজে পাচ্ছেন।
ডব্লিউএইচওর সিনিয়র ইমার্জেন্সি অফিসার ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'আমরা সব সময় ভূমিকম্প একই জিনিস দেখি। দুর্ভাগ্যবশত, পরের সপ্তাহগুলোতে প্রাথমিক হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তুষারপাত ও প্রচণ্ড ঠান্ডায় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ।'
নিহতদের অনেকেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত উত্তর সিরিয়ার বাসিন্দা। এসব এলাকার লাখ লাখ শরণার্থী তুর্কি সীমান্তের দুই পাশে ক্যাম্পে বসবাস করছে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় শত শত হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। তুরস্ক ও সিরিয়া উভয় দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে।
বেশ কিছু ভিডিওতে বিভিন্ন ভবন ধ্বংসের দৃশ্য দেখা যায়। কিছু ১২ তলা উঁচু ভবন এখন মাটিতে ভেঙে পড়েছে। রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত এবং যতদূর চোখ যায় ধ্বংসস্তূপের বিশাল পাহাড়।