বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ওয়েবসাইটে তথ্যের ঘাটতি, সার্ভারেরও সমস্যা রয়েছে। কারো নিজের নামের বানান ভুল, আবার কারো বাবা-মায়ের এবং হলের নামও ভুল। রেজিস্ট্রেশন না করলেও রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন দেখাচ্ছে অনেকের। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়ার পরেও পরিচয় না মেলার অভিযোগ রয়েছে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ষষ্ঠ সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার চিত্র এমনই।
জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয় নথিপত্র চাওয়াসহ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে বিজ্ঞপ্তিতে যেসব নথিপত্রের চাহিদা উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলো রেজিস্ট্রেশন ফর্মে জমা দেওয়ার নির্ধারিত স্থান নেই। একই সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের রেজিস্ট্রেশন করার সময়ও জটিলতায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও সার্ভারে ঢুকতে পারছেন না তারা। এমনকি শিক্ষার্থীদের নিজের নাম ও বাবা-মায়ের নামের বানান ভুল দেখানোর মতো অভিযোগ উঠেছে। ফলে সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল ১০ ফেব্রুয়ারি এ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ১০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর রেজিস্ট্রেশন করতে পারলেও দুই থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত ভেরিফিকেশন অসম্পন্ন থাকছে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন করার সময় নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তবুও সাপোর্ট অপশনে মেসেজ করা হলেও উত্তর দেওয়া হয়নি।
রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় জটিলতার বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) অধ্যাপক মো. ফজলুল করিম পাটোয়ারী বলেন, ‘সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশনের জন্য ওয়েবসাইট তৈরির দায়িত্ব আইআইটি’র শিক্ষার্থীদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে শুনেছিলাম। তবে আইআইটির শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব না দিয়ে বাইরের একটি কোম্পানির মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে। তবে তারা যে ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন, সেটাতে শিক্ষার্থীরা নানা সমস্যায় পড়েছেন। হয়তো তারা ওয়েবসাইট তৈরির পরবর্তী ব্যবস্থাপনা, লোড ম্যানেজমেন্ট ও সিকিউরিটির বিষয়ে জানতেন না।’
এ বিষয়ে সমাবর্তনের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এম শামীম কায়সার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে গড়মিল থাকায় শিক্ষার্থীদের নিজের নাম, বাবা-মায়ের নাম ও হলের নাম ভুল হয়। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সেগুলো সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ছবির যে সমস্যা ছিল, সেটাও সমাধান করা হয়েছে।’
এদিকে রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানোসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অন্য দাবিগুলো হলো—সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সনদ বিনা মূল্যে প্রদান করা, সমাবর্তনের ফি ১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উইকেন্ড কোর্সের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ বন্ধ করা।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।