শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি উদ্যানে পানীয় জলের সংকট

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০৪

লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে শুষ্ক মৌসুমে বন্যপ্রাণী খাওয়ার পানির সংকটে ভুগছে। এই দুই উদ্যানে বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকসহ বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণী রয়েছে। ক্রমাম্বয়ে বনের প্রাকৃতিক গাছগাছালি বিলীন হওয়ায় পাহাড়ি ছড়া, নালা ও খাল শুকিয়ে যাচ্ছে। তৃষ্ণা মেটাতে লোকালয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে বন্যপ্রাণী ট্রেন ও যানবাহনের নিচে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছে।

পরিবেশকর্মী ও স্থানীয়দের মতে, গত কয়েক দশকে লাউয়াছড়া বনের গভীরতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। দুই দশক আগেও শুষ্ক মৌসুমে ছড়া, খাল ও জলাধারে পানি দেখা যেত। একই অবস্থা সাতছড়ি উদ্যানেও। তবে বনের ঘনত্ব কমে যাওয়ায় এখন শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ছড়া ও নালা শুকিয়ে বন্যপ্রাণীর খাওয়ার পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও খাবারের জোগান না থাকায় অনেক প্রাণী লোকালয়ে এসে নানা সময়ে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। বন্যপ্রাণী সাধারণত উন্মুক্ত স্থানের পানি পান করে না। এরা বনজঙ্গলের গর্ত ও নালার পাশের পানি খেয়ে থাকে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে ছড়া-খাল শুকিয়ে গেছে।

লাউয়াছড়া বনের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জী প্রধান জিডিসন প্রধান সুচিয়ান বলেন, আজ থেকে পনেরো, বিশ বছর আগেও শুকনো মৌসুমে এখানকার ছড়া ও খালে পানি থাকত। এখন পানি শুকিয়ে যায়। তবে ছড়ার কিছু কিছু স্থানে ড্রেজিং করে পানি রাখার জন্য ইতিপূর্বে সহব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রস্তাবও করা হয়েছে। লাউয়াছড়া বনরেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বন্যপ্রাণীর খাওয়ার পানির সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ছড়া শুকিয়ে গেলে বন্যপ্রাণীর খাওয়ার পানির কিছুটা সংকট দেখা দেয়। বনের ডরমেটরি এলাকায় একটি জলাধার আছে। অন্য জলাধারে পানি থাকে না।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী ইত্তেফাককে বলেন, এখনো ছড়াগুলোর কিছু কিছু স্থানে পানি রয়েছে। লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি উদ্যানে পানির জন্য জলাধার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। দুটি উদ্যানে জলাধার তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বৃষ্টি ও গাছ কমে গেছে আর জনসংখ্যা বেড়ে গেছে। যে কারণে শুষ্ক মৌসুমে উদ্যানের ভেতর পানির কিছুটা সংকট থাকে। তবে পানি না পেলেও গাছের পাতা চিবিয়ে নেয় প্রাণীসকল।

 

ইত্তেফাক/ইআ