আবু তাহের (২৬) নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রলীগ নেতাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দুইটার দিকে গুরুদাসপুর ফায়ার সার্ভিসের সামনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহত আবু তাহের পৌরসদরের চাঁচকৈড় কাচাড়িপাড়া মহল্লার আবু তালেবের ছেলে। তিনি গুরুদাসপুরের বিলচল শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।
হামলার পর পরই শহরে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়। গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলীর পক্ষে রাজনীতি করেন আবু তাহের।
জানা গেছে, হামলায় অংশ নেন গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সাবেক নেতা নাজিম উদ্দিন সরদারের দুই ভাতিজা হেলাল সরদার (৩৫) ও শিশির সরদার (২৮) এবং পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক নজুর ছেলে সম্রাট (৩২)। হামলাকারীরা গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার বাসিন্দা।
হামলার ঘনটায় গুরুদাসপুর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। হামলাকারীরা পলাতক থাকায় তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল গণি, নোহাস ও মামুন মোল্লা ইত্তেফাককে জানান, সোমবার দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের পাশের পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা আবু তাহের। এ সময় তাহেরের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালান তিনজন। তাদের হাতে হাতুড়ি, চাইনিজ কুড়াল এবং হাঁসুয়া ছিল। পরে তারা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা সিএনজি যোগে পালিয়ে যান।
পৌর বিএনপির সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু বলেন, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা কোনো দলীয় ঘটনা নয়।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাজিব হোসেন ইত্তেফাককে জানান, আহত আবু তাহেরের মাথার তিন জায়গায় আঘাত রয়েছে। বেশ কয়েকটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। মাথায় আঘাত থাকায় তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ছাত্রলীগ নেতা আবু তাহের জানান, সপ্তাহ খানেক আগে একটি কাজ নিয়ে বিএনপির কর্মী হেলালের সঙ্গে তার বাকবিতন্ডা হয়। ঘটনার পর থেকে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন হেলাল। দলের কিছু হাইব্রিড নেতার ইন্ধনে সোমবার দুপুরে তাকে একা পেয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা চালান হেলাল সম্রাট ও শিশির।
তিনি বলেন, আচমকা এসে সম্রাট তার মাথার ওপরে হাতুরি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় তার মাথায় হাসুয়া এবং চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে কোপানো হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি হাসপাতালে আসেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ইত্তেফাককে জানান, ছাত্রলীগ নেতার ওপর হামলার ঘটনা দুঃখজনক। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
গুরুদাসপুর থানার ওসি আব্দুল মতিন ইত্তেফাককে জানান, ঘটনার পর থেকে শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকায় হামলা পরবর্তী সময়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মামলা দায়ের হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।