বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজের পর উদ্ধার হওয়া ৪ জেলের মধ্যে আব্দুল হাই নামে আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ জনে। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া জেলে আব্দুল হাই বরগুনার তালতলী উপজেলার চামুপাড়া এলাকার আচমত আলী হাওলাদারের ছেলে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, উদ্ধার হওয়া ৪ জনের মধ্যে আব্দুল হাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিলো। সোমবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বঙ্গোপসাগরে ডাকাতির সময় ডাকাতের পিটুনি খেয়ে সাগরে পড়ে যাওয়া নয় জেলের মধ্যে ৪ জেলেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এইসব জেলেরা একটানা ৪০ ঘণ্টা ভাসমান অবস্থায় ছিল। বঙ্গোপসাগর থেকে এফবি মা মরিয়ম ট্রলার তাদের উদ্ধার করে। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হয় সোমবার সকালে গভীর বঙ্গোপসাগরে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।
ফিরে আসা জেলে ইয়াসিন বলেন, ডাকাত দলের মার খেয়ে সাগরে পরে গিয়ে তারা ৯ জন একটি বয়া ধরে ৪০ ঘণ্টা ভেসেছিলেন। তার বড় ভাই কাইয়ুম জোমাদ্দার সাগরে ভাসমান অবস্থায় তার হাতেই মারা যান। এভাবে একে একে আরও চার জন মারা গেলে তাদেরকে সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।
পাথরঘাটা থানার ওসি সঞ্জয় মজুমদার বলেন, সাগরে ডাকাতির ঘটনায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে।
দক্ষিণ জোন কোস্টগার্ডের অপারেশন অফিসার লেফটেন্যান্ট এম হাসান মেহেদী বলেন, নিখোঁজ ৯ জেলের মধ্যে ৪ জনকে তালতলীর একটি ট্রলার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের পাথরঘাটা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে সোমবার রাতে একজনের মৃত্যু সংবাদ পেয়েছি। বাকিদের উদ্ধারে ও জলদস্যুদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
র্যাব-৮ এর কমান্ডিং অফিসার তুহিন রেজা বলেন, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড ও র্যাবের যৌথ টিম সাগরে টহল দিচ্ছে। এছাড়া বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির আরও ৫ ট্রলার সাগরে উদ্ধার অভিযানে রয়েছে।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পায়রা বন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় দস্যুরা হামলা করে। এসময় ৯ জেলেকে জিম্মি করে ট্রলারে থাকা মালামাল লুটে নেয়। এছাড়া আরও ৯ জেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেয় ডাকাতরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।