শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

নকল হচ্ছে টিসিবি কার্ড

আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ০২:৩০

মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদি ইউনিয়নে স্বল্পমূল্যের টিসিবির কার্ড জালিয়াতি করে দ্বিগুণ করার অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসনের দেওয়া ১ হাজার ৩০০টি কার্ডের বিপরীতে সুবিধাগ্রহণকারীর সংখ্যা হয়েছে দ্বিগুণ। যার অর্ধেকই নকল। ফলে টিসিবি পণ্য সরবরাহ করতে গিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ছেন ইউনিয়ন পরিষদ ও ডিলার উভয়ই।

জানা গেছে, করোনাকালীন সময়ে এই ইউনিয়নে যারা প্রণোদনা ভাতা পেয়েছিলেন সেই ১ হাজার ৩০০ জনকে টিসিবি কার্ড দেওয়া হয়। পরে নতুন করে আরও ২০৩টি কার্ডের বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঐ সময়ে নবগঠিত বারাদি ইউনিয়নের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আপিল উদ্দিন। তার স্বাক্ষরে ঐ কার্ডগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু তার স্বাক্ষরযুক্ত সিলমোহর জাল করে প্রায় দ্বিগুণ কার্ড তৈরি করে একটি জালিয়াতি চক্র। কিছু কার্ডে কোনো সিলও নেই। যারা ঐ কার্ডগুলো নিয়ে পণ্য নিতে আসছেন তারা নিজেরাও কার্ডের মালিক নন।

গত মঙ্গলবার বিভিন্ন মাধ্যমে খবর আসে বারাদি ইউনিয়নে টিসিবি পণ্য দেওয়ার পর কার্ড নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এমন খবরের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে খোঁজ নেওয়া হয়। দেখা যায় প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ কার্ড হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন পণ্য নিতে। সকলের মুখে মুখে এক কথা, কার্ডগুলো নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চেয়ারম্যানের একজন প্রতিনিধি কার্ডগুলো নিয়ে নিচ্ছেন। চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি রুহুল আমিন কার্ড নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। স্থানীয় টিসিবি ডিলার নাজবুল হোসেন বলেন, এই ইউনিয়নের পণ্য দিতে এসে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। হিসাবের বাইরে অনেক মানুষ পণ্য নিতে আসায় বিষয়টি চেয়ারম্যান সাহেবকে জানালে তারা কার্ডগুলো জমা নিয়ে নেন।

ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন লিটন বলেন,  ইউনিয়নের ১ হাজার ৩০০ কার্ড হওয়ার কথা কিন্তু নকল ক?রে ২ হাজার ৬০০ কার্ড বানা?নো হয়েছে। যার ফলে দ্বিগুণ লোক আসছে পণ্য নিতে। দেখা যাচ্ছে, আসল কার্ডধারীরা পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

বারাদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, হয়তো অনেক শিক্ষক এবং কম্পিউটার দোকানদাররা জাল কার্ড তৈরি করে দিয়েছেন। যার ফলে ১ হাজার ৩০০ কার্ডের স্থলে আড়াইহাজারের অধিক কার্ড হয়েছে। ফলে এ নিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তাই আমরা এবার কার্ডগুলো জমা নিচ্ছি এবং এই কার্ডগুলোর মধ্য থেকে সুষ্ঠুভাবে ১ হাজার ৩০০ কার্ড তৈরি করা হবে, যাতে করে এই ভোগান্তি থেকে সাধারণ মানুষ রেহাই পায়।

প্রসঙ্গত, রমজান উপলক্ষে টিসিবি কার্ডধারীরা এক কেজি ছোলা, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ডাল এবং দুই লিটার সয়াবিন তেল নিতে পারছেন ৪৭০ টাকায়।

ইত্তেফাক/এমএএম