মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

মেম্বারের হাত-পা ধরে মেলেনি চাল, স্লিপ পেয়েও বঞ্চিত জেলেরা

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৮:৪০

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসার ইউনিয়নে জেলেদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ভিজিএফ কার্ডের চাল প্রকৃত নিবন্ধিতদের না দিয়ে মেম্বারের পছন্দমতো ব্যবসায়ী, কৃষক, অন্য এলাকার লোকদের দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জেলেরা সঠিক বিচার চেয়ে উপজেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেন ধুলাস্বার ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড (চর গঙ্গামতি) এলাকার অসংখ্য জেলে।

অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সিদ্দিক স্থানীয় জেলেদের সরকারি কার্ড আটকে নিজের হাতে সাদা কাগজে নাম লিখে পছন্দের লোকদের মাঝে তা বিতরণ করেন। এছাড়া মৃত জেলেদের নামেও চাল নিয়ে আত্মসাৎ করেন। স্থানীয় জেলেরা এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে হুমকিও দেওয়া হয়।

চর গঙ্গামতি এলাকার ভুক্তভোগী জেলে ইউসুফ বলেন, আমি জেলের কাজ করে ৩০ লাখ টাকা ঋণী হয়েছি। সরকার আমাদের যে কার্ড দিয়েছে, তা মেম্বারে আটকে রেখেছে। চাইতে গেলে হুমকি দিচ্ছে। আমার ছেলেও এখন জেলের কাজ করে। যেদিন চাল দিয়েছে সেদিন কার্ড থাকতেও মেম্বারের হাত-পা ধরেছে চমার ছেলে, তারপরও চাল পাইনি।

চল্লিশ বছর জেলে পেশায় থাকা রাজা মিয়া বলেন, গত ২০ তারিখ জেলেদের চাল দিয়েছে, তখন আমিও চাল আনতে যাই। চেম্বারের কাছে কার্ড চেয়েছি, তখন সে বলে কার্ড দেবো না পারলে কিছু করো। আমার সামনে বসে একজন জেলে না এমন ব্যক্তি বরগুনা থেকে এখানে এসেছে ২ মাস আগে- তার কাছে ৫০০ টাকা নিয়ে একটি স্লিপ দিয়ে চাল দিয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মেম্বার সিদ্দিক বলেন, আমরা মোট নিবন্ধিত জেলেদের থেকে কিছু কম চাল পাওয়ায় সমন্বয় করে দিতে হয়। কিন্তু কার্ড আটকে রাখার কথা মিথ্যা। আমরা চাল দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে জেলেদের কার্ড দিয়ে দিচ্ছি। আমি কোনো অনিয়ম করি না। কারও কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেই না।

ধুলাস্বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম বলেন, আমার পরিষদের বেশিরভাগ মেম্বার পুরানো হওয়ায় তারা সিন্ডিকেট করে জেলেদের চাল আত্মসাৎ করছে। বারবার বলার পরেও এগুলোর কোনো প্রতিকার করতে পারছি না।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জেলেদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি বেশ কয়েকবার ওখানে গিয়ে তাদের সতর্ক করেছি। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/এসকে