পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় গ্রীষ্ম মৌসুমে মাটির নিচের স্তরে নেমে গেছে পানি। এতে করে উপজেলার অনেক নলকূপে মিলছে না পর্যাপ্ত পানি। তাতে খাবার পানিসহ দৈনন্দিন পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ অঞ্চলের নদীগুলোতে পানি নেই। শুকিয়ে গেছে পুকুরের পানিও। বিশেষ করে অঞ্চলটি উঁচু এলাকা হওয়ায় গ্রীষ্ম মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এতে করে অচল হয়ে পড়ে নলকূপ। সংকট দেখা দেয় খাবারসহ দৈনন্দিন ব্যবহৃত পানির। কয়েক বছর ধরেই এ সংকট বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নবিত্ত ও অসহায় মানুষের মধ্যে পানির জন্য হাহাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টিউবওয়েলে পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। পানির জন্য ছুটতে হচ্ছে দূর-দূরান্তে।
স্থানীয়রা জানান, দুই মাস ধরে ঠিকমত টিউবওয়েলের পানি উঠছে না। পাম্প বসিয়েও পানি মিলছে না। যারা বডিং করে পাম্প বসিয়েছেন, তারা কিছুটা পানি পাচ্ছেন। তাদের বাড়ি থেকে পানি আনতে গেলেও বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় তারা পানি দিতে চাচ্ছেন না। বাড়িতে ব্যবহৃত কাপড়, থালাবাসন ধোয়া ও রান্নাবান্না করতে যে পানি দরকার তা মিলছে না।
কৃষকরা জানিয়েছেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে অনেক স্থানে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি উঠছে না। অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে পুকুর-ঘাট, খাল-বিল ও নদ-নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। চৌচির হয়ে ফেটে যাচ্ছে ফসলের ক্ষেত। ৮-১০ ফুট গর্ত খুঁড়ে শ্যালো মেশিনগুলো সেখানে বসানো হচ্ছে। ইঞ্জিন গর্তে বসানোর পরেও পানি উত্তোলনের পরিমাণ বাড়ছে না। বেড়েছে সেচ খরচ। এখন এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে ৭-৮ লিটার ডিজেল লাগছে। আগে প্রতি বিঘা জমিতে একবার সেচ দিতে ৮০০ টাকা খরচ হলেও এখন ১২০০ টাকা খরচ হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মিঠুন কুমার রায় বলেন, এ সময়ে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। গত বছর সিদ্দিকনগর এলাকায় সার্ভে করেছিলাম তখন পানির প্রথম লেয়ার ৩২ ফিট নিচে নেমে যেতে দেখেছিলাম। বিশেষ করে বরেন্দ্রসহ অনেক এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন হওয়ায় সাধারণ নলকূপে পানি উঠে না। এখন পানির স্তর ৩০-৩৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। এতে খাবার পানির সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।