শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

কাপ্তাই লেকে পানি অস্বাভাবিক কম, বন্ধ হতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদন

আপডেট : ২৩ মে ২০২৩, ১২:৫১

রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ে অবস্থিত কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র চরম পানি সংকটে পড়েছে। কাপ্তাই লেকে পানির স্তর কমে বিপজ্জনক পর্যায়ে নেমে এসেছে। পানির অভাবে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে। টানা খরার কারণে কাপ্তাই লেকে পানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে যাচ্ছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, কাপ্তাই লেকের বিভিন্ন জায়গা বর্তমানে শুকিয়ে আছে। যেসব নৌকা পানিতে ভেসে থাকার কথা সেগুলো এখন শুকনো মাটিতে আটকে আছে। লেকে পানি কম থাকার করণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ধস নেমেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট পুরোপুরি সচল থাকলেও বর্তমানে শুধু মাত্র একটি ইউনিট চালু রেখে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। পানি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে এই কেন্দ্র থেকে ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হতো।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যু কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের বলেছেন, কাপ্তাই লেকে পানি কম রয়েছে।

তিনি বলেন, রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী এই মুহূর্তে (২২ মে) কাপ্তাই লেকে পানি থাকার কথা ৭৮ দশমিক ১০ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল)। কিন্তু লেকে এখন পানি রয়েছে ৭৩ দশমিক ৫০ ফুট এমএসএল। লেকে পানি কম থাকার কারণে বর্তমানে ১নম্বর ইউনিট চালু রেখে ৪২ মেগাওয়াটের স্থলে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।

অন্য একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বর্তমানে ঝুঁকিতে রয়েছে। আকাশে মেঘ দেখা যাচ্ছে না। তপ্ত রোদে খাঁ খাঁ করছে চার দিক। বৃষ্টির দেখা নেই। সহসা ভারী বৃষ্টি না হলে এবং কাপ্তাই লেকে পানির স্তর ৭০ ফুট এমএসএলের নিচে নামলে পানির অভাবে বিদ্যুত্ উত্পন্ন বন্ধ হয়ে যাবে।

এদিকে কাপ্তাই লেকে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ধস নামার পাশাপাশি নৌ যোগাযোগও প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। লেক তীরবর্তী এলাকা ছাড়াও বিলাইছড়ি, বরকল, লংগদু, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বিশাল অংশে যাতায়াতে প্রধান মাধ্যম হলো নৌ-যোগাযোগ। কিন্তু লেকে পানি কম থাকায় নৌ-চলাচলও প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে অত্যন্ত কষ্ট ও ঝুঁকি নিয়ে মানুষ যাতায়াত করছেন।

কাপ্তাই বোট চালক সমিতির সভাপতি মো. ইদ্রিস জানান, লেকে পানি না থাকায় বোট চালানো যাচ্ছে না। এর ফলে বোট চালকদের আয়-রোজগারও বন্ধ।

সহসা ভারী বৃষ্টি না হলে এবং লেক পানিতে ভরে না উঠলে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ইত্তেফাক/আরএজে