বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জীনের টাকার লোভ দেখিয়ে নারীকে হত্যার অভিযোগ

আপডেট : ২৮ মে ২০২৩, ২১:৪৩

পঞ্চগড়ে জীনের বাদশা চক্রের খপ্পরে পড়ে শামিমা আকতার সোনিয়া (২৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৭ মে) গভীর রাতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি পঞ্চগড় ধাক্কামাড়া এলাকায়। সে ওই এলাকার সোলেমান আলীর মেয়ে।

সোনিয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, সোনিয়াকে প্রতিবেশী সোহেল ও তার স্ত্রী আফরোজা বেগম দীর্ঘদিন ধরে জীনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা এবং সোনা গয়না পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আসছেন। শনিবার বিকালে ওই দম্পতি মসজিদে বিভিন্ন ধরনের আমল করলে জীন এসব দেন বলে সোনিয়াকে উদ্ধুদ্ধ করেন। আমল শিখিয়ে দেওয়ার নাম করে সোনিয়াকে বাড়ি থেকে তালমা হিমালয় বিনোদন পার্কে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ান। এরপর তার বমি শুরু হয়। পরে তাকে সেখানে ফেলে ওই দম্পতি পালিয়ে যায়। পরে সোনিয়ার পরিবারের লোকজন সোনিয়াকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গভীর রাতে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তে পাঠান।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তৌফিক আহমেদ অপরিচিত বিষক্রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই নারী। পরে রাতে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পুরো বিষয়টি জানা যাবে।

মৃতের ভাই মনিরুজ্জামান মুন্না জানান, আমার বোনের মৃত্যুর জন্য সোহেল ও তার স্ত্রী আফরোজা দায়ী। তারা আমাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। জীনের টাকার লোভ দেখিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

পঞ্চগড় পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শকের সহকারী অভিযুক্ত সোহেল প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। আমি বা আমার স্ত্রী এমন কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নই বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

পঞ্চগড় পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফুল আলম সোহেল আফরোজা দম্পতির বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে বলেন, জীনের বাদশার কোনো কর্মকাণ্ডের বিষয় থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।  লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ইত্তেফাক/পিও