সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৯ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

এরদোয়ানের জয় ও আগামীর তুরস্ক

আপডেট : ৩০ মে ২০২৩, ০০:২৫

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পদে টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। গত রোববার (২৮ মে) অনুষ্ঠিত টার্কিশ প্রেসিডেনশিয়াল ইলেকশনে দ্বিতীয় দফা ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, এরদোয়ান পেয়েছেন ৫২ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। আর তার প্রধান বিরোধী জোটের প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোলু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ, তুরস্কের ইতিহাসে টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসলেন এরদোয়ান।

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন এরদোয়ান। ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। এরপর ২০১৪ সাল থেকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে টানা দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। এই ধারাবাহিকতকায় গত ১৪ মে তুরস্কে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রেসিডেন্ট পদে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়াই নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় দফায়। দ্বিতীয় দফায় তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটাভুটিতে শেষ পর্যন্ত জয়ের মুকুট ওঠে এরদোয়ানের মাথায়। ভোটের ফল আসার পর নিজ শহর রাজধানী ইস্তাম্বুলে তত্ক্ষণাৎ ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ‘জাতির পক্ষে রায় নিয়ে আমরা দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ করেছি।’ ছাদখোলা বাসের ওপর দাঁড়িয়ে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমরা আপনাদের (তুর্কি নাগরিক) আস্থা রক্ষা করব।’  

লক্ষণীয় বিষয়, দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনে জয়লাভের পর আরো পাঁচ বছরের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট থাকবেন এরদোয়ান। অর্থাৎ, টানা ২৬ বছর ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড সৃষ্টি করতে চলেছেন এই শাসনকর্তা, যা তুরস্কের ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক! 

আরো লক্ষণীয়, একবিংশ শতাব্দীর প্রায় শুরু থেকেই তুরস্কের সিংহাসন সামলাচ্ছেন এরদোয়ান। এরদোয়ানের শাসনামলে, বিশেষ করে গেল কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। এর ফলে স্বভাবতই নির্বাচনের আগে এরদোয়ানের ‘জয়-পরাজয়’ নিয়ে নানা রকম কথাবার্তা শোনা যাচ্ছিল।  কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, তুরস্কের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতা শেষ পর্যন্ত এরদোয়ানের ওপরেই ‘আস্থা’ রেখেছেন।

মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হয়ে পড়লে কিংবা উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা দিলে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমনটাই ধরে নেওয়া হয় যে, ক্ষমতার পালাবদল ঘটবে। জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেবে সরকারের ওপর থেকে। কিন্তু এরদোয়ান সরকারের ক্ষেত্রে (ভোটের শুরু থেকে এরদোয়ানকে নিয়ে যেমনটা বলা হচ্ছিল) দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। যা হোক, এরদোয়ানের জয়ের পর এখন অনেকের প্রশ্ন, কীভাবে এরদোয়ান নির্বাচনে জয়ী হলেন? এবং আরো উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন, কেমন হতে পারে আগামীর তুরস্ক?

  • এরদোয়ান যেভাবে নির্বাচনে জয়ী হলেন 

এরদোয়ান নির্বাচনে কীভাবে জয়ী হলেন—এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আমাদের তাকাতে হবে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের দিকে। কোনো সন্দেহ নেই, এই নির্বাচন ছিল ‘অবাধ’। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজস্ব মনোনীত প্রার্থীদের সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোটের সব কার্যক্রম চালাতে পেরেছেন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই। ভোটও গণনা করা হয়েছে সঠিকভাবে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিজের প্রতিনিধি রাখার অধিকার ভোগের বিষয়েও কোনো ধরনের অভিযোগ-আপত্তি তোলেনি দলগুলো। এবং সবচেয়ে বড় বিষয়, ভোটাররা ভোট দিতেন পেরেছেন বেশ স্বাধীনভাবে। তবে, এত কিছুর পরও বিতর্ক থেকেই যায়—অনেকে বলছেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি!’ এমনটা মনে করার কারণও আছে বৈকি।

প্রথমত, এরদোয়ানের সম্ভাব্য শক্ত নেতৃস্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী একরেম ইমামোগলুকে ডিসেম্বরে ‘জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বকে অপমান করার অভিযোগে দুই বছরেরও বেশি কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। অনেকে মনে করেন, একরেমকে নিজের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতেই তাকে অন্যায়ভাবে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কারো কারো এমনও মত, আদালতের রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রসঙ্গত, ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয় মেয়র একরেম ২০১৯ সালের স্থানীয় নির্বাচনে এরদোগানের দলকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এক জরিপে দেখা যায়, নির্বাচনে একরেমের কাছে এরদোয়ান বড় ব্যবধানে পরাজিত হতে পারেন। যা হোক, এ ধরনের নানা কারণে অনেকের বিশ্বাস, একরেম নির্বাচনের মাঠে থাকলে ভোটের ফলাফল এরদোয়ানের বিপক্ষে যেতে পারত! 

দ্বিতীয়ত, তুর্কি মিডিয়ার ওপর এরদোয়ানের প্রায় একচ্ছত্র দখল ও কর্তৃত্ব রয়েছে। তুর্কি মিডিয়ার অধিকাংশই সরাসরি এরদোয়ানের আত্মীয়দের মালিকানাধীন ও নিয়ন্ত্রণে। যেমন—সেদাত আলবায়রাক পরিচালিত জনপ্রিয় দৈনিক ‘দ্য ডেইলি সাবাহ’। নিজের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া বাদে স্বাধীন নিউজ সাইট, যেমন—‘টি২৪’-এর মতো গণমাধ্যমগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে ভোটের বেশ আগ দিয়েই। অর্থাৎ, বিমানবন্দর, রাস্তা, সেতু প্রভৃতি অবকাঠামো নির্মাণের মতো ইতিবাচক খবর তুলে ধরার মাধ্যমে এরদোয়ানকে ‘তুরস্ককে এগিয়ে নেওয়া বিশ্বনেতা’ হিসেবে চিত্রিতের কাজটি করেছে অনুগত মিডিয়াগুলো। বিষয়টি এরদোয়ানকে শুরু থেকেই বেশ খানকিটা এগিয়ে রাখে। এমনও শোনা যায়, টিভিতে কয়েক ডজন সাংবাদিকের সামনে তাকে যেসব প্রশ্ন করা হয়, তা আগে থেকেই প্রস্তুত করা থাকত; ফলে নিজের মতো করে উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেতেন এরদোয়ান। শুধু প্রচলিত টিভি চ্যানেল কিংবা প্রিন্ট মিডিয়া নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে ভোটের আগে—এমন অভিযোগ আছে। 

এক্ষেত্রে কী ঘটেছে? বলা হচ্ছে, বিপুলসংখ্যক ভোটার এতে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যান। নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলোতে এরদোয়ানকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যে, ভোটারদের মধ্যে এই আশঙ্কা ও ভয় তৈরি হয়, ‘কিলিকদারোলু নির্বাচিত হলে দেশ আরো খারাপ পরিস্থিতিতে পড়ে যাবে!’ আরেকটি বিষয় হলো, অস্বচ্ছ পদ্ধতিতে নির্বাচনের ফলাফল প্রক্রিয়াকরণের কারণে জালিয়াতির আশঙ্কার কথা বলছেন অনেকে। নিয়ম অনুযায়ী, গণনা শেষে প্রতিটি ব্যালট বাক্স ও ‘ফলাফল পত্র (রেজাল্ট শীট)’ শহরগুলোর নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া পুলিশ ও আঞ্চলিক সামরিক বাহিনী থেকে শুরু করে প্রতিটি জায়গায় হয় ‘এরদোয়ানের নিজস্ব লোক’ ছিল কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এক কথায়, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থেকেই যাচ্ছে।

অন্য আরেকটি দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যায়, সিনান ওগানের কাছ থেকে এরদোয়ানের সমর্থন পাওয়া, যিনি দুই সপ্তাহ আগে নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে ৫ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। ওগানকে যেভাবেই হোক, নিজের পক্ষে টেনে নেন এরদোয়ান। তার প্রতি সমর্থন দিতে রাজি করান। সবশেষে রক্ষণশীল ও ধর্মীয় ভোটারদের নিজের দলের প্রতি সমর্থন জোগাতে এরদোয়ান অবলম্বন করেন ‘নানা কৌশল’। এতে করে তুরস্কের রক্ষণশীল ধর্মীয় শ্রেণি এরদোয়ানকে ‘একজন বিশ্বনেতা এবং একজন নায়ক’ হিসেবে দেখতে শুরু করে। ‘তুরস্ককে আবারও মহান’ হিসেবে গড়ে তোলার যে স্লোগান দেন এরদোয়ান, তার পক্ষে লড়াইয়ে নামেন হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ তুর্কি। এই জায়গাটাতে এরদোয়ানকে বেশ সফল বলতে হবে।

  • নির্বাচন-পরবর্তী তুরস্কে কী ঘটতে পারে? 

তুরস্কের ‘মরিয়া অবস্থা’র প্রেক্ষাপটে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলতেই থাকবে আগামী দিনে। এর ফলে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেকের মনে থাকার কথা, প্রজাতন্ত্রের শততম বার্ষিকী তথা ২০২৩ সালের মধ্যে ‘তুর্কি পুনরুজ্জীবনের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এরদোয়ান। এই সময়কালের মধ্যে ‘বিশ্বের শীর্ষ ১০ শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কথা ছিল তুরস্কের। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি কি পূরণ করতে পেরেছেন এরদোয়ান? তুরস্ক সবে শীর্ষ ২০-এ জায়গা পেয়েছে (১৯তম)—অর্থাৎ, এখনো বহু পথ বাকি!

গত তিন বছর ধরে তুরস্কের অর্থনীতি এতটাই নাজুক অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে, আজকের তুরস্ক বড় ধরনের মন্দার সম্মুখীন। অর্থাৎ, নির্বাচন-পরবর্তী তুরস্কে অস্থিরতা-অস্থিতিশীলতা মাথাচাড়া দিতেই থাকবে নিয়মিত বিরতিতে। তুর্কি লিরার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। গত কয়েক মাসে নির্বাচনের ব্যয় মেটাতে রিজার্ভ খালি করে ফেলেছে তুর্কি কেন্দ্রীয় ব্যাংক, তুরস্কের জনগণের জন্য যা বয়ে আনতে পারে ‘ব্যাপক বেকারত্ব ও জীবনযাত্রার ব্যয় সংকোচন’। ভুলে গেলে চলবে না, তুরস্কে মুদ্রাস্ফীতির হার গত ২৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে (৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ)। এমন একটি পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এরদোয়ানকে সম্ভবত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ‘তাল মিলিয়ে চলা’ ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকবে না। এর ফলে তুরস্কের সঙ্গে পশ্চিমাদের দূরত্ব বাড়বে স্বভাবতই। সব মিলিয়ে নির্বাচন-পরবর্তী তুরস্কে কোন অবস্থা বিরাজ করবে, তা সময়ই বলে দেবে।

  • অদূর ভবিষ্যতে কী হতে পারে? 

তুরস্কের সংবিধান অনুসারে, এটাই হবে এরদোয়ানের শেষ অফিস, তথা এরদোয়ান জামানার শেষ মেয়াদে প্রবেশ করল তুরস্ক। তাছাড়া ৬৯ বছর বয়সি এরদোয়ানের স্বাস্থ্যও ভেঙে পড়ছে। শারীরিকভাবে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছেন তিনি। হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। বক্তৃতা দিতে প্রায়শই বেগ পেতে হচ্ছে। আগামী বছরগুলোতে এরদোয়ানের স্বাস্থ্য আরো খারাপ হতে পারে। সেক্ষেত্রে এক জন বিশ্বস্ত ডেপুটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হতে পারে তাকে। অর্থাৎ, এরদোয়ান তার তৃতীয় তথা শেষ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ রয়েছে।

এমন আশঙ্কাও আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করার চিন্তা থেকে তার বিরুদ্ধে ‘দলীয় অভ্যুত্থান’ ঘটতে পারে। এই দাবির পক্ষে যুক্তি হলো, এরদোয়ানের নিজের দলের মধ্য থেকেই কোনো কোনো নেতা ‘অভ্যুত্থান’ ডেকে আনতে পারেন এই উদ্দেশ্য থেকে যে, এর ফলে ২০২৮ সালের নির্বাচনের আগে নিজের পক্ষে জনসমর্থন গড়ে তোলা সহজ হবে। 

নির্বাচন-পরবর্তী তুরস্কে আপাতত কিছুটা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকতে পারে স্বাভাবিকভাবেই। তবে দৃষ্টি রাখতে হবে অদূর ভবিষ্যতের দিকে। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা তুরস্ককে ঘিরে ধরবে বলেই মনে করছেন অধিকাংশ বিশ্লেষক।

লেখক :চার্লস স্টার্ট ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক, দ্য সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড সিভিলাইজেশনের পরিচালক ও পাবলিক অ্যান্ড কনটেক্সচুয়াল থিওলজির নির্বাহী সদস্য 
দ্য কনভারসেশন থেকে অনুবাদ : সুমৃৎ খান সুজন

 

ইত্তেফাক/ইআ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন