শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলে মুগ্ধ পর্যটক

নৌকাগুলোকে মনে হয় শূন্যে ভাসা

আপডেট : ০৬ জুন ২০২৩, ১২:২৯

গোয়াইনঘাটের স্থানীয় সাংবাদিক আলী হোসেন বললেন, এবার বৃষ্টি কম। পাহাড়ি এ নদীতে তেমন ঢল নামেনি। তাই পানি কম। সেই স্বচ্ছ ভাব এখনো তেমন ফুটে উঠছে না। তবে জাফলং নামটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে সবুজ পাহাড়। আর স্ফটিক স্বচ্ছ নদীর পানির ওপর একটি ঝুলন্ত ব্রিজ। তার নিচে সাদা সাদা ছোট বড় অসংখ্য পাথর ও নুড়ি পাথর। পানির ওপর নৌকাগুলোকে দেখলে মনে হয় যেন শূন্যে চলাচল করছে।

এর পানি এতই স্বচ্ছ যে মনে হয় কাঁচের মাঠ। এমন মোহনীয় প্রাকৃতিক পরিবেশ কার না ভালো লাগে। এখানে প্রকৃতির এমন শোভা দেখতে পর্যটকরা ছুটে আসেন নানা স্থান থেকে। জাফলংয়ে আগের সৌন্দর্য হারিয়ে গেলেও এখনো প্রতিদিন সবুজ পাহাড়ি ও স্বচ্ছ পিয়াইন নদীর শীতলতা উপভোগ করতে পর্যটকরা আনন্দে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

জাফলংয়ে স্বচ্ছ জল। ছবি: ইত্তেফাক

সিলেটের গোয়াইনঘাটের গহীন জঙ্গলে ৭১ সালের আগেও এই দৃশ্যটি ছিল বিস্ময়। পর্যটনশিল্পের প্রসরে এটি দেশ ও বিদেশে পরিচিতি লাভ করে। তবে পাথর ব্যবসায়ীরা নির্বিচারে জাফলংয়ে পাথর আহরণ করতে থাকলে এক পর্যায়ে এটিকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে অনেক উৎকট ঝামেলা দূর হয়েছে।

খালি চোখে ওপর থেকে নদীর তলদেশ পর্যন্ত দেখতে পাওয়া যায়। সে এক মনোমুগ্ধকর ব্যাপার। মেঘালয়ের দুটি পাহাড়কে ধরে রেখেছে ‘ডাউকি ব্রিজ’। এই ব্রিজের উত্তর দিকে যে নদীটি নেমে এসেছে। সেটির নাম ডাউকি নদী। নদীটি এ পাড়ে এসে নাম ধারণ করেছে পিয়াইন নদী। ডাউকি নদী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং মালভূমির দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চল থেকে উৎপন্ন। এটি ছোট্ট পাহাড়ি নদী।

মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে পর্যটকের ভিড়। ছবি: ইত্তেফাক

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং দিয়ে নদীটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে পিয়াইন নাম ধারণ করে নানা পথ ঘুরে এটি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক পর্যন্ত পৌঁছে সুরমায় মিলিত হয়েছে। ডাউকি খরস্রোতা পাহাড়ি নদী। বর্ষায় এটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই নদী ও এর আশপাশের এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।

ডাউকি নদী খাসী ও জয়ন্তিয়া অঞ্চল দিয়ে বয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। স্বচ্ছ কাঁচের মতো এ নদীতে নৌবিহার করতে করতে কীভাবে যে দিন কেটে যায় তা বোঝাই যায় না। সিলেটের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের লক্ষ্যে ডাউকিতে ঝুলন্ত সেতুটি নির্মিত হয় ১৯৩২ সালে। ব্রিজের খানিক উজানে নদীর পানি এতই স্বচ্ছ যে নৌকায় চড়লে মনে হয় যেন নৌকাটি শূন্যে ভেসে যাচ্ছে।

প্রায় সব সময় পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে জাফলংয়ে।  ছবি: ইত্তেফাক

গোয়াইনঘাটের আলী হোসেন বললেন, এবার বৃষ্টি কম। পাহাড়ি এ নদীতে তেমন ঢল নামেনি। তাই পানি কম। সেই স্বচ্ছ ভাব এখনো তেমন ফুটে উঠছে না।

জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান বলেন, জাফলং পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকা। ওই এলাকাকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শুধু জাফলংই নয় সিলেটের অন্যান্য পর্যটক স্পটকেও আকর্ষণী করার চেষ্টা চলছে।     

ইত্তেফাক/আরএজে  

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন