বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

আপত্তি সত্ত্বেও চলছে শমশেরনগরে রেললাইনের ওপর পশুর হাট

আপডেট : ০৮ জুন ২০২৩, ১১:২৭

সিলেট ও আখাউড়া সেকশনের শমশেরনগর রেল স্টেশনের দক্ষিণ অংশে রেলপথের ওপরেই সপ্তাহের রোব ও বুধবার পশুর হাট বসে। স্টেশন মাস্টারের আপত্তি ও পশুর হাট বন্ধ রাখার ব্যাপারে ইউএনওর নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে ইজারাদার নিয়মিত হাট পরিচালনা করছেন। এতে ঝুঁকি নিয়েই ক্রেতা ও বিক্রেতারা পশু বেচাকেনা করছেন। এছাড়া যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, শ্রীমঙ্গল সেকশনে শমশেরনগর স্টেশন এলাকায় কিলোমিটার ৩০৭/৭-৮-এ প্রতি রোব ও বুধবার স্থানীয় লোকজন ও বাজার কমিটির সমম্বয়ে গরু বেচাকেনার জন্য গরুর হাট পরিচালিত হয়। স্টেশন এলাকার বাউন্ডারি ও সীমানাপ্রাচীর না থাকায় বাজারে ক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসা গরু রেললাইনের ওপর অবস্থান করে। গরুর হাট বসানোর কারণে রেললাইনে দেওয়া পাথর সরে যাচ্ছে এবং ট্রেন চলাচলের ঝুঁকি বাড়ছে। রেলপথের নিরাপত্তার স্বার্থে গরুর হাট না বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকাস্থ বিভাগীয় প্রকৌশলী-২কে ২৩ মে চিঠি পাঠায় শ্রীমঙ্গলের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ)। 

বুধবার (৭ জুন) বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, শমশেরনগরের ভানুগাছগামী আউটার ও স্টেশনের সন্নিকটে রেললাইনে বসছে পশুর হাট। রেললাইনের সিগন্যাল ঘেঁষে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইজারাদার। বিক্রেতারা সিগন্যাল, রেলের স্লিপার বা পয়েন্টের চাবির সঙ্গে গরু বেঁধে বিক্রি করছেন। অনেকে গরু ও ছাগল নিয়ে রেললাইনের ওপরেই বসে থাকছেন। ট্রেন এলে শুরু হচ্ছে ছুটোছুটি।

বিক্রেতা সাজ্জাদ মিয়া ও গণেশ গোয়ালা বলেন, স্থানটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আমাদের করার কী আছে! ইজারাদার ও পশুর হাট আয়োজকেরা এখানে স্থান দিয়েছেন, ঝুঁকি জেনেও কেউ কিছু বলছেন না। তাছাড়া ট্রেন আসার শব্দ সব সময় শোনাও যায় না।

অভিযোগের বিষয়ে শমশেরনগর বাজার ইজারাদার মো. আশাহিদ মিয়া বলেন, জায়গার অভাবে রেললাইনের ওপরে বা রেলের জায়গায় গরুর হাট বসিয়েছি। তবে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা নজর রাখি। ট্রেন এলেই সবাইকে সরিয়ে দেই। তবে পশুর হাট বন্ধ থাকার বিষয়ে ইউএনওর কাছ থেকে তিনি কোনো নির্দেশনা পাননি বলে দাবি করেন।

শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার জামাল হোসেন বলেন, এখানে গরুর বাজার না করার জন্য বারবার নিষেধ করেছি।

তাছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তার পরও গরুর বাজার বসানো হয়। শমশেরনগর বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমরাও ইজারাদারকে নিষেধ করেছি, যাতে রেললাইনের ওপরে পশু নিয়ে কেউ না যায়।

শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ বলেন, পশুর হাট করার মতো কোনো জায়গা না থাকার কারণে এখানে হাট বসে। তাছাড়া উপজেলা পরিষদ থেকে লিজ দেওয়া হয়। জায়গা নির্ধারণ হওয়া প্রয়োজন।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীন বলেন, রেলপথের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ পশুর হাট আপাতত বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছিল। তার পরও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।

এ ব্যাপারে রেলওয়ের শ্রীমঙ্গলের উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. ফিরোজ গোলদার জানান, বিষয়টি অবগত হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি।

ইত্তেফাক/আরএজে