জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করাসহ তিন দফা দাবিতে অনশন ও অবস্থানরত সামিউল ইসলাম প্রত্যয় অনশন ভেঙেছেন।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাব্বির আলমের উপস্থিতিতে পানি পান করে অনশন ভাঙেন তিনি।
এরপর বেলা সোয়া ১২টার দিকে সামিউলকে তার জন্য বরাদ্দকৃত মীর মশাররফ হোসেন হলের ৪১৭ নম্বর কক্ষে পৌঁছে দেন প্রাধ্যক্ষ। একই সঙ্গে তার কক্ষে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী সবুজ রায়কে হল থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বের করে দেওয়া হয়।
এর আগে, সকালে হল প্রাধ্যক্ষকে ছয়টি লিখিত শর্ত দেন সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। শর্তগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে মর্মে হল প্রাধ্যক্ষ শর্তে সই করলে প্রত্যয়ও সেখানে স্বাক্ষর করে অনশন ভাঙেন।
তার শর্তগুলো হলো– হলে অবস্থানরত সব শিক্ষার্থী ও আসন সংখ্যার হিসাব তালিকা তৈরি, ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁকা কক্ষগুলো প্রশাসনিকভাবে সিলগালা করা, যেসব আসনে মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে তাদের আসনে বৈধ শিক্ষার্থীদের তুলে দেওয়া ও তার তালিকা প্রকাশ, মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগে বাধ্য করা, সব বিষয়ে হল প্রশাসন সাংবাদিকদের তথ্যের আপডেট দিয়ে সহযোগিতা করবে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না করলে প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ করবে।
অনশন ভাঙার পর সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, ‘প্রশাসন এতদিন ধরে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ দেখাতে পারেনি। প্রাধ্যক্ষ স্যার খসড়া তালিকা দেখিয়েছেন। আমার তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের কর্ম পরিকল্পনা মেনে নিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে আমি অনশন ভেঙেছি। যদি কথা না রাখেন আমি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।’
মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সাব্বির আলম বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১১টায় আমার ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পানি পান করে প্রত্যয় অনশন ভাঙে। আমরা কয়েকটি শর্তে একটি চুক্তি করেছি। তার দাবিগুলো বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।’
এর আগে, গত ৩১ মে থেকে তিন দফা দাবিতে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের মাঠে অনশনে বসেন সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক ছাত্র। তার দাবিগুলো ছিল- গণরুমের বিলুপ্তি, মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রদের হল ত্যাগে বাধ্য করা এবং গণরুমে অবস্থানরত সব বৈধ শিক্ষার্থীদের আসন নিশ্চিত করা।