গোপালগঞ্জের কুশলিতে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ (বিলওয়াবস)।
২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এই ইনস্টিটিউট এর কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরবর্তীতে ইনস্টিটিউটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু বর্তমানে ইনস্টিটিউটটির বেহাল অবস্থা। ইন্সটিটিউটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র উচ্চশিক্ষার জন্য গঠন করা হয়, যেখানে এমফিল ও পিএচডি করার সুযোগ থাকলেও প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ও গাফিলতিতে উচ্চ শিক্ষার কার্যক্রম অনেকটাই খাতা-কলমে আবদ্ধ।
বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ কোর্সটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে বাধ্যতামূলক থাকায় এই ইনস্টিটিউট এর শিক্ষকদের কার্যক্রম যেন শুধু ক্লাস নেওয়ার ভিতরেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। পরিচালক নিয়োগে সময়ক্ষেপণ ও যথোপযুক্ত তদারকি এবং সুবিধার অভাবে গবেষণা কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার তেমন সুযোগ পাচ্ছেন না এই বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। আর যেসব গবেষণা হচ্ছে সেগুলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকদের অধীনে থেকে করা হচ্ছে। ইনস্টিটিউট এর নির্দিষ্ট নিয়মনীতি থাকলেও তা তেমন বাস্তবায়ন হয় না। ইনস্টিটিউট এর স্বতন্ত্র পরিচালক থাকার কথা থাকলেও নেই কোন স্বতন্ত্র পরিচালক। পদাধিকার বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনিও বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে সময় দিতে পারেন না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ইন্সটিটিউট এর কার্যক্রম প্রশাসনিক ভবন থেকে সরিয়ে পিএচডি ডরমিটরিতে নেওয়া হয়েছে। একটি আবাসিক ভবনে ইন্সটিটিউট এর কার্যক্রম স্থানান্তরিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইনস্টিটিউটটির শিক্ষকবৃন্দ।
এ ব্যাপারে ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সানিয়া আক্তার বলেন, 'প্রথমে কুশলিতে কার্যক্রম চললেও পরে প্রশাসনিক ভবনে আনা হয়। আমাদের এটি একটি উচ্চ শিক্ষার ইনস্টিটিউট। একে একাডেমিক ভবনে নেওয়া যেতো। অথচ আবাসিক ভবনে যেতে বলা হলো আমাদের। আমাদের একটা সেমিনার কক্ষ কিংবা বই রাখার জন্য জায়গা প্রয়োজন ছিল, সেটিও নেই।'
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক সোহানা সুলতানা বলেন, 'প্রশাসনিক ভবনের ছোট কক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করা খুব কঠিন ছিল। কিন্তু এখন আবাসিক ভবনে স্থানান্তরিত করার বিষয়টি আরো অসম্মানজনক ও কষ্টকর হয়ে গিয়েছে।'
তিনি আরো বলেন, 'এ ইনস্টিটিউট এর অধীনে মোট ৩ জন পিএইচডি ও ২ জন এমফিল গবেষক রয়েছেন। এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অথচ এ ইনস্টিটিউটটি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। নির্দিষ্ট সময়ে এডিটোরিয়াল বোর্ড এর মিটিং হয় না। পরিচালক আশ্বাস দিলেও অনেক কিছু বাস্তবায়ন হয় না।'
এ ব্যাপারে, বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কিউ.এম. মাহবুব বলেন, 'একজন পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। ইনস্টিটিউটটি পিএইচডি ডরমিটরিতে আরও বড় জায়গা পাবে, কাজ করতে সুবিধা হবে।'