হঠাৎ একদিন বাবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) একাউন্ট নষ্ট হয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই একাউন্টে ছিল প্রয়োজনীয় হাজারো তথ্য। তবে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও সেই একাউন্টি আর ফেরত পাওয়া যায়নি। আর তখনই ছেলে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
শুধুমাত্র বাবা নয় বাবার মতো যেন অন্য কারো আইডি হারিয়ে না যায়। সেই সংকল্প একদিন যে সফল ব্যক্তি হয়ে উঠতে সহায়তা করবে সেটা হয়তো তিনি ভাবেননি, একটা সময়ে এসে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে তৈরি করেন নাজমুল হুদা। শুধু তাই নয় সমাজ সেবক হিসেবে দুঃস্থ- অসহায়দের জন্য কিছু করার চেষ্টায় ছুটে চলেন অবিরাম।
সোশ্যাল সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ নাজমুলের শুরুর গল্পটা ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে।
ইউটিউবের কল্যাণে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করেন।পরবর্তীতে ২০১৬ সালের এপ্রিলে ভারতে সাইবার নিরাপত্তা দলের সঙ্গে যোগ দেয়। প্রায় পাঁচ বছর তাদের সঙ্গে কাজ করে ২০২০ সালে নিজ দেশে কয়েকজনকে নিয়ে একটি সাইবার নিরাপত্তা টিম গঠন করেন।
বাংলাদেশের অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী, ইউটিউবারের সাইবার সমস্যা সমাধান দিয়েছেন তিনি।
নাজমুল হুদা নাঈমের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবী ইউনিয়নের ফুলকুমার গ্রামে। ভূরঙ্গামারী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন।
শুধু দেশেই নয়, বাইরের দেশের হাজারো সাইবার নানা সমস্যা নিয়ে নাজমুল হুদা নাঈমের শরণাপন্ন হয়েছেন।
মুঠোফোনে কথা হয় ফ্রিল্যান্সার আনিসুর রহমান নিলয়ের সঙ্গে। তিনি জানান, আমার ফেসবুক আইডিটা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক জায়গায় যোগাযোগ করি কিন্তু কেউ সমাধান দিতে পারেননি। পরে এক বন্ধুর মাধ্যমে কলেজছাত্র নাজমুল হুদার সন্ধান পাই। আমার সমস্যার কথা জানালে সে আমাকে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে আইডি উদ্ধার করে দেন।
কুঁড়েঘর ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক গ্রুপের এডমিন কে.এম. রাকিব আল হাসানের ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে দ্রুত সময়ে নাজমুল সমাধান করে দেন।
সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে নাজমুল হুদা নাঈম জানান, প্রযুক্তির বিশ্ব প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রযুক্তি পণ্যের সুবিধা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে ডেটা নিরাপত্তার ঝুঁকিও। সবাই আলোর পথে হাঁটছে, সম্ভাবনার পথে। কিন্তু অপরাধ চক্র থেমে নেই। সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছে সরকার, কর্পোরেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সকল আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
তিনি আরো বলেন, ছোটবেলা থেকেই সাইবার সিকিউরিটি ও হ্যাকিং এর প্রতি আমার গভীর আগ্রহ ছিল। আমার ইচ্ছা ও আগ্রহ দেখে অনেকেই হাসাহাসি করতেন। পঞ্চম শ্রেণিতে থাকতে আমি এ কাজ করছি। দেশ ও দেশের বাহিরের মানুষের সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্যাগুলো অনলাইনের মাধ্যমে সমাধান করে দেই। মাসে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে গরীর ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আমি মনে করি, মানুষ মানুষের জন্য।