শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

বন্যায় নাইক্ষ্যংছড়িতে সড়ক ভেঙে চুরমার, তলিয়েছে রবিশস্য

আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১৪:০৭

নাইক্ষ্যংছড়িতে বন্যায় তলিয়ে গেছে উপজেলার নিচু এলাকাসহ আগাম রবিশস্য। উপজেলার বিভিন্ন সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি-আলীকদম সড়কের বিভিন্ন অংশে ভেঙে চুরে একাকার হয়ে গেছে। একই সঙ্গে উপজেলার দৌছড়ি ইউনিয়নে পানির স্রোতে নিখোঁজ রয়েছে মেমপই ম্রো (৩০)। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা।

ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকায় তিনটি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানি বলেন, তার ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড করিম্মার ঝিরিতে পাহাড়ধসে একই পরিবারের শিশুসহ চার জন আহত হয়েছে। পাহাড়ধসে কয়েকটি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বাইশারী আলিক্ষ্যং সড়ক চাক  হেডম্যান পাড়া সড়কে কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা  দিয়েছে।

তিনি জানান, নাইক্ষ্যংছড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পার্বত্য মন্ত্রী বীরবাহাদুরের পক্ষে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে উপজেলার ৫০০ পরিবারকে ত্রাণসামগ্রী (চাল, ডাল, লবণ) পৌঁছে  দেওয়া হচ্ছে। নিহত ও নিখোঁজদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

পরবর্তী নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম। 

দৌছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মেহাম্মদ ইমরান বলেন, তার এলাকার সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়কটি হাঁটুভাংগা নামক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

নাইক্ষ্যংছড়িতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আলমামুন জানান, উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত, ১২০টি ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে সাত টন চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

 লোহগাড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ঘর। ফাইল ছবি

পেকুয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও মাতামুহুরী নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। নিম্নাঞ্চলে এখনো হাঁটুপানি। পানিবন্দি রয়েছে হাজার হাজার মানুষ। দুই দিন বৃষ্টি নেই, বেড়িবাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার কারণে পানি কিছুটা কমছে। তবুও নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত থাকায় খাদ্য, সুপেয় পানি ও ওষুধের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

তাছাড়া পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়ক, উপসড়ক, কাঁচা রাস্তা ও বাঁধের ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠছে। অনেক এলাকায় কালভার্ট ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ঢল আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামীণ জনপদে নষ্ট হয়েছে কৃষকের বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের ও বেড়িবাঁধ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে  ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায় পরিবারগুলো ত্রাণের আশায় হাহাকার করছে। এলাকায় খাদ্য ও খাবার পানির অভাবে হাজার হাজার পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। পেকুয়ায় বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া এখনো অর্ধেক মানুষ ঘরে ফিরতে পারছে না। পেকুয়া সদর ইউনিয়নের কয়েক হাজার ঘরে পলিমাটি জমে থাকায় সেখানে ঢুকতে পারছে না বাসিন্দারা। বন্যায় পানির স্রোতে উপজেলার কাঁচা ও পাকা রাস্তা, মাছের ঘের, পুকুর ও ধানী ফসলের খেত ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘর। ফাইল ছবি

তবে চকরিয়া-পেকুয়ায় ভবিষ্যতে বন্যা প্রতিরোধে মাতামুহুরী নদী ড্রেজিং ও দুই পাড়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান।

ইত্তেফাক/আরএজে