বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

এমপির মৃত্যুতে সমর্থকদের মারধর করে বাড়ি ছাড়া করেছে প্রতিপক্ষ

আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:২২

প্রয়াত সংসদ সদস্য সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের কর্মী সমর্থকদের ওপর হামলা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মারধর অব্যহত রয়েছে। বাড়ি ছাড়া করে রাখা হয়েছে তিন গ্রামের এমপি সমর্থিত পুরুষদের। বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন স্বাক্ষরিত ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, গুরুদাসপুর উপজেলার ধাবারিষা ইউনিয়নের ধারাবারিষা মোল্লাপাড়া, ফকিরপাড়া, দাদুয়া ও তালবাড়িয়া গ্রামে ২ সেপ্টেম্বর থেকে তাণ্ডব শুরু করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিপন সরকারের সমর্থকরা। এতে এমপি সমর্থিতদের বাড়ি ভাঙচুর শেষে লুটপাট চালানো হয়েছে। মারধর করে আহত করা হয়েছে অন্তত ১৯ জন নারী পুরুষকে। আহতদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আব্দুল মতিন দাবি করেন, ২০ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। ৩০ আগস্ট নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যুর পর থেকেই আধিপত্য বিস্তারকে নিয়ে আওয়ামী লীগের বিবাদমান ওই পক্ষ নৃশংসতা শুরু করে। বিশেষ করে উপনির্বাচনের জন্য বড়াইগ্রামের উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন রিপন-হাবিবের লোকজন। 

আহতরা ইত্তেফাককে জানান, সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর ছয়টার দিকে গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের ধারাবারিষা মোল্লাপাড়া গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিপন সরকারের সমর্থকরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিনের সমর্থক বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারধর ও লুটপাট করেন। এ ঘটনায় বিল্লালসহ তার ছেলে ইমরান (৩৫), স্ত্রী সাবিহা (৫৫), মেয়ে নাজমা (১৮) আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ইমরানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তবে ধারাবারিষা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিপন সরকার অভিযোগ করে ইত্তেফাককে বলেন, মতিন গ্রুপের সমর্থক বিল্লাল ও তার লোকজন সোমবার সকাল ১০টার দিকে হামলা চালিয়ে রহিম সরকার (৬০), ইসমাইল মোল্লা (৫৫), হবি সরকার (৫০), আমির সরকার (৫৫) ও শিল্টু সরকারকে (৪০) পিটিয়ে গুরুতর যখম করেছে। আহতদের মধ্যে আব্দুর রহিম, ইসমাইল ও হবিকেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

ভুক্তভোগী নাজমা (১৮), সাবিহা (৫৫) ইত্তেফাককে জানান, তারা এমপি সমর্থক হওয়ায় ধারাবারিষা ফকিরপাড়ার মৃত আহাদ আলী হাদার ছেলে মো. হাবিব মণ্ডল (২৮) ও তার ফুফাতো ভাই আওয়ামী লীগ নেতা রিপন সরকার ও আমিনুল হক আমানত হাজীর নেতৃত্বে ধারাবারিষা ফকিরপাড়া, মোল্লাপাড়া ও তালবাড়িয়া, দাদুয়া তার কর্মী-সমর্থকদের ওপর নৃশংস হামলা ও লুটপাট চালায়।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিপন সরকার ও যুবলীগ কর্মী হাবিব মণ্ডল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মতিন চেয়ারম্যান ও তার ছেলে সোহানের নেতৃত্বে এলাকার সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ওসি মো. মোনোয়ারুজ্জামান বিবাদমান দু’পক্ষের সংর্ঘষের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, কোনো পক্ষই মামলা করেনি। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/পিও