কারো বাসায় গিয়ে বসার ঘরের আসবাবপত্রের নান্দনিকতা দেখলেই বোঝা যায় বাসার কর্তাব্যক্তির আভিজাত্য। আসবাবপত্রে শুধু সৌন্দর্য থাকলেই হবে না, সেই সৌন্দর্যের শিল্প-নন্দন ভাবটাও বজায় থাকতে হবে। আভিজাত্যের অনন্য আসবাবপত্রের খোঁজখবর নিয়ে এবারের আয়োজন।
বাড়িতে ঢোকার পরপরই অতিথিদের নজরে যে ঘরটি পড়ে সেটি হলো বিশেষ যত্নে সাজানো গোছানো ড্রয়িংরুম, আর সৌখিন উপকরণ দিয়ে কীভাবে আকর্ষণীয় ও অন্যদের থেকে ভিন্ন করা যায় সে বিষয়ে সবার আগ্রহই একটু বেশি। ড্রয়িংরুম সাজানোর সময় স্বাভাবিকভাবেই বসার ব্যবস্থা রাখা হয় এবং এর সঙ্গে একটি সেন্টার টেবিল ও সাইড টেবিলও রাখা হয়। যদি ড্রয়িংরুম একটু বড় হয় সেক্ষেত্রে অনেকেই আবার কর্নারে একটি শোকেস রাখতেও পছন্দ করেন। এত আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো, এসব সামগ্রী দিয়ে ঘর সাজালে ঘরটি পাবে সৌখিনতা ও আভিজাত্যের ছোঁয়া।
ড্রয়িংরুমের সেন্টার টেবিল, সাইড টেবিল এবং কর্নার শোকেসে বিভিন্ন ধরনের সেন্টার পিস অথবা শোপিস ব্যবহার করা যেতে পারে।
আপনার ড্রয়িংরুম বড় হলে অর্থাৎ বসার জন্য শোফা, ডিভান সাজানোর পর তার মাঝখানে সেন্টার টেবিল রাখতে পারেন, সেন্টার টেবিলের ওপর বিভিন্ন ধরনের ক্রিস্টাল, সিরামিক, কাচের শোপিস অথবা নানা ধরনের ফুলদানি সাজিয়ে রাখতে পারেন।
বড় ক্রিস্টাল অথবা কাচের পাত্রে পানি দিয়ে ফুলের পাপড়িসহ ফ্লোটিং মোমবাতিও রাখতে পারেন সেন্টার টেবিলে। আপনি যদি ফুল ভালোবাসেন তাহলে তো কথাই নেই, টেবিলের ওপর একটি চমত্কার ইকেবানা সাজাতে পারেন। সেক্ষেত্রে সেন্টার টেবিলটি একটু বড় হলে ভালো।
সেন্টার টেবিল যদি কাচের এবং কম উচ্চতার হয় তবে বেশি ভারী শাপিস না রাখাই ভালো। সেক্ষেত্রে ছোট ছোট অনেকগুলো শোপিস বিভিন্ন স্টাইলে সাজালে নান্দনিক লাগবে।
আপনার ড্রয়িংরুমের টেবিলটি যদি কাঠের হয় তবে সোফাসেটের কুশন কভারের সঙ্গে মিল করে টেবিল রানার দিতে পারেন। এর উপরে একটি সুন্দর ক্রিস্টাল অথবা চীনামাটির ঢাকনাসহ বাটিতে রাখতে পারেন চকলেট অথবা ড্রাইফ্রুট।
সাইড টেবিলে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ল্যাম্পশেড, ভাস্কর্য অথবা বনসাই।
অনেকের আবার নানা ধরনের জিনিস সংগ্রহ করার বিষয়ে আগ্রহ থাকে। যেমন বিভিন্ন ধরনের মগ, মূর্তি, স্থাপত্যশিল্পের শোপিস ইত্যাদি। এসব সামগ্রী সাজিয়ে রাখতে পারেন আপনার কর্নার শোকেসটিতে।
অনেক কর্নার শোকেসে তাকগুলো কাচের হয় এবং আর্টিফিসিয়াল আলোর ব্যবস্থাও থাকে। সেক্ষেত্রে নানা ধরনের ক্রিস্টালের, কাচের অথবা সিরামিকের শোপিস রেখে তার ওপর আলো ফেললে তৈরি হবে এক বর্ণিল পরিবেশ।
অনেক সময় দেখা যায় যে ড্রয়িংরুম এবং ডাইনিংরুম সঙ্গে থাকে। তখন আপনি ডাইনিং স্পেসেও শোকেস রাখতে পারেন। এছাড়া ঘরের বিভিন্ন কোণে, কনসোল টেবিলও সাজাতে পারেন শোপিস দিয়ে।
বাজারে নানা ধরনের চীনা মাটি, বাঁশ, বেত, মাটি, পিতল, কাঠ, তামা, রুপার শোপিস এবং ফুলদানি পাওয়া যায়। সেগুলো সাজিয়ে রাখতে পারেন ঘরের বিভিন্ন জায়গাতে।
যারা সমুদ্র ভালোবাসেন তাদের সেই অনুভূতিকে তাজা রাখার জন্য একটি পাত্রে কিছু শামুক ঝিনুক রেখে সেন্টার টেবিল অথবা সাইড টেবিলে রাখতে পারেন। আর আকারে যদি বড় সাইজের হয় এই সামগ্রীগুলো, তবে কর্নার শোকেসটিতেও সাজিয়ে রাখতে পারেন।
বেডরুমের বিভিন্ন দেয়ালে কাবিজ অথবা তাকের ওপরটাও সাজাতে পারেন শোপিস দিয়ে।
ডাইনিং স্পেস যদি একটু বড় হয় তাহলে বেসিনের পাশে গ্লাস সেলফ লাগিয়ে সেখানে বিভিন্ন ধরনের ফল অথবা সবজির শোপিস রাখতে পারেন। আর সবুজ ভালোবাসলে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের আর্টিফিসিয়াল অথবা ন্যাচারাল গাছের শোপিস। এছাড়া ঘরের প্রবেশ পথে অথবা সিড়ির ল্যান্ডিংয়ে নানা ধরনের মাটির অথবা কাঠের তৈরি শোপিস দিয়ে সাজাতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের হাতি, ড্রাই ফ্লাওয়ার অথবা কাঠের কারুকার্য করা শোপিসকে প্রাধান্য দেওয়াই উত্তম। শুধু আপনার ঘরটাকেই নয় আপনার মনটাকেও পূর্ণতা এনে দেয় এই শোপিস বা সেন্টার পিস।