রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সুদের টাকা দিতে না পারায় কৃষককে শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ  

আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:০৪

সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এক কৃষককে (৫৫) শিকলে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সুদে কারবারি আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে। এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত ওই কৃষককে শিকলে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তবে ঘটনাটি নিয়ে থানায় কোনো অভিযোগ হয়নি।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সুদেকারবারি আব্দুল আজিজের বাড়িতে ওই কৃষককে আটক করে রাখা হয়। সুদেকারবারি আব্দুল আজিজের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মসিনদা শিকারপারা গ্রামে।

নির্যাতনের শিকার কৃষক দাবি করেন, বছর তিনেক আগে চড়া সুদে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছিলেন তিনি। ওই ৮০ হাজার টাকার মধ্যে দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ এবং ৩০ হাজার মূল টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা চলতি বছরে দেওয়ার কথা ছিল।  কিন্তু তিনি হঠাৎ দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে পড়েন। এ কারণে সংসারে অভাব জেঁকে বসে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ফেরত দিতে পারেননি তিনি।

তিনি আরও বলেন, শনিবার সকালে সুদে কারবারি আব্দুল আজিজ ও তার পিতা আফজাল হোসেন লোকবল নিয়ে বাড়িতে আসেন।  সেখানে তাকে গালমন্দ করেন।একপর্যায়ে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক হাত-পা বেঁধে তুলে নিয়ে যান আব্দুল মজিদের বাড়িতে। সেখানে তাকে সকাল থেকেই শিকলে বেঁধে রেখেছিলেন।

সুদে কারবারি আব্দুল আজিজ তার বাড়ির বারান্দায় ভুক্তভোগী কৃষককে কোমরে শিকল বেঁধে তালা দিয়ে আটকে রাখেন। টাকা দিতে না পারায় দিনভর তাকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়। টাকা দিতে না পারলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকিও দেন আব্দুল আজিজ।

কৃষককে শিকলে বেঁধে রাখার কথা স্বীকার করে সুদেকার বারি আব্দুল আজিজ বলেন, দীর্ঘদিন আগে তিনি ওই কৃষককে টাকা দিয়েছিলেন। বারবার তাগিদ দিলেও টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না। তাই তিনি বাধ্য হয়ে কৃষককে বাড়ি থেকে তুলে এনে নিজের বাড়িতে শিকল বন্দি করে রেখেছেন। টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি ওই কৃষকে শিকল মুক্ত  করবেন না।

ভুক্তভোগী এই কৃষকের স্ত্রী ইত্তেফাককে জানান, শনিবার সকালে কৃষক স্বামী ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ করে বাড়িতে এসে সুদেকার বাড়ি আব্দুল আজিজ ও তার লোকজন চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ঘুমন্ত স্বামীকে বিছানা থেকে  জোরপূর্বক তুলে হাত পা বেঁধে ফেলেন। সে সময় টাকার দাবিও করেন। টাকা দিতে না পারায় স্বামীকে চোখের সামনেই টানাহেচরা করতে করতে নিয়ে যান। তিনি সুদেকার বাড়ি আব্দুল আজিজের বিচার দাবি করেন।

গুরুদাসপুর থানার ওসি মোনোয়ারুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, কৃষককে শিকলে বেঁধে রাখার ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন তিনি।

ইত্তেফাক/পিও