রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

নারী আসক্তিই তপনের কাল, যৌনতার প্রলোভনে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা

আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:৫৫

যৌনতার প্রলোভন দেখিয়ে তপন কুমারকে (৪৫) পিটিয়ে হত্যা করেন নারী চক্রের হোতা সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। পাওনা টাকা তুলতে না পেরে পরিকল্পিতভাবে অথৈ বিলে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়। হত্যকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে র‌্যাব-৫। 

নিহত তপন কুমার পেশায় বাদাম বিক্রেতা ছিলেন। তিনি পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের চংধুপইল গ্রামের খিদিশ চন্দ্রের ছেলে। তপনের নারী আসক্তি ছিল। 

শুক্রবার লাশ উদ্ধারের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত তপনের বড়ভাই নিতিশ চন্দ্র শনিবার সকালে বাগাতিপাড়া মলেড থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শনিবার রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তার করে রোববার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

র‌্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত তপনের কললিস্ট পর্যবেক্ষণ করে তদন্ত শুরু করা হয়। সবশেষ শনিবার রাতে পাশ্ববর্তী আত্রাই ও বাগাতিপাড়া এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় বাগাতিপাড়া পৌর শহরের বারইপাড়ার বয়েজ উদ্দিন সরকারের ছেলে মাইনুল ইসলাম (৪৫), একই মহল্লার আলম মোল্লার ছেলে মিলন মোল্লা, আমিরুল ইসলামের ছেলে আলামিন ইসলাম (২০), বিহারকোল গ্রামের বাবুল শেখের ছেলে শাহাবুল শেখ (৩০) ও বাগাতিপাড়ার পাঁকা ইউপির কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে শরিফুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। 

র‌্যাব জানিয়েছে, বাগাতিপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করাচ্ছিলেন অভিযুক্ত মাইনুল ইসলাম ও তার চার সহযোগী। উপজেলার নেড়ইগাছা বিলের মাঝখানে মাইনুলের ওই অনৈতিক কার্যক্রম চলতো। নিহত তপন কুমার সেখানকার খদ্দের ছিলেন। প্রায়ই মাইনুলের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে যৌনতায় লিপ্ত হতেন তপন। যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার ঘটনায় মাইনুলের কাছে কিছু টাকা বকেয়া ছিল তপনের। টাকা তুলতে না পেরে মাইনুল নতুন নারীর সঙ্গে তপরবে যৌনতার প্রস্তাব দেন। ওই প্রলোভনে রাজি হয়ে ২১ সেপ্টেম্বর মাইনুলের সঙ্গে নেড়ইগাছার অথৈ বিলের ইয়াছিন আলীর মুরগীর খামারের কাছে যান। সেখানে পরিকল্পীতভাবে মাইনুল ও তার সহযোগীরা তপনকে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে লাশটি বাগাতিপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের পিছনের আখ ক্ষেতে ফেলে রাখেন। 

র‌্যাব-৫ এর সিপিসি-২ নাটোর কোম্পানীর অধিনায়ক এএসপি সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, তপনের লাশ উদ্ধারের পর থেকে গা ঢাকা দিয়ে নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় আত্মগোপনে ছিলেন মাইনুল ইসলাম। ঢাকা যাওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন। শনিবার দিবাগত রাতে র‌্যাব আত্রাই থেকে মাইনুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকায় মাইনুলের ৪ সহযোগীকে বাগাতিপাড়া উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইত্তেফাক/পিও