রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত

চীন ‘বহিরাগত হস্তক্ষেপের’ বিরোধিতায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে

আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:৩০

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তাঁর দেশ অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ও উন্নয়ন অর্জনের জন্য ‘বহিরাগত হস্তক্ষেপের’ বিরোধিতায় বাংলাদেশকে সমর্থন করে।

চীনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে চীনের দূতাবাস আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এ মন্তব্য করেন।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করতে চীন বাংলাদেশকে সমর্থন করে, যাতে দেশটি (বাংলাদেশ) অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে এবং উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবন অর্জন করতে পারে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফারুক খান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও চীন কৌশলগত সহযোগিতা আরও গভীর করতে এবং এর মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে এক উচ্চতায় উন্নীত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এক চীন নীতি অনুসরণ করে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা জোরদার করতে চীন যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, তার প্রশংসা করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার দেশ, যারা বিআরআইতে যোগদান করেছে এবং বিআরআই বিগত সাত বছরে সোনালি বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে ভিত্তি ও বিকাশ লাভ করেছে।

চীনের রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দুই দেশের উন্নয়নের নতুন ঐতিহাসিক সুযোগগুলোকে কাজে লাগাতে হবে, উন্নয়ন কৌশলগুলোকে সমন্বিত করতে হবে, উচ্চমানের উন্নয়ন লক্ষ্য স্থির করে বিআরআই সহযোগিতা পরিচালনা করতে হবে এবং একে অপরের সম্পূরক ও পরিপূরক হিসেবে সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে হবে।

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমরা অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, নতুন জ্বালানি, কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও গভীর করতে পারি। যৌথ প্রচেষ্টায় আমরা অবশ্যই চীন জাতির মহান পুনর্জীবনের স্বপ্ন ও বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করতে পারব।’ তিনি বলেন, গত এক দশকে চীন এই কূটনৈতিক নীতিমালা অনুসরণ করে চলছে এবং সক্রিয়ভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। তিনি আরও বলেন, চীন ও বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারি ও ডেঙ্গু জ্বরের বর্তমান বিস্তারের মতো পরিস্থিতিতে অভিন্ন চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমরা সব সময় আমাদের অভিন্ন স্বার্থ টিকিয়ে রাখতে একে অপরকে সম্মান করি, বুঝি ও সমর্থন করি।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল আকর্ষণীয় নানা অনুষ্ঠান। চীনের সিচুয়ান ওভারসিজ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন কালচারাল এক্সচেঞ্জ মিশনের অভিনেতারা অ্যাক্রোব্যাটিকস, চীনা ক্যালিগ্রাফি এবং সিচুয়ান অপেরা পরিবেশন করেন।

চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার অর্জন নিয়ে একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে এ বাইট অব সিচুয়ান, কালারফুল ইউনান, ইঙ্ক ওয়াশ ও রেড চায়নার থিম নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

ইত্তেফাক/এমএএম