প্রাকৃতিক দুর্যোগে সতর্ক থাকা জরুরি। ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বরিশাল-খুলনা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম পর্যন্ত উপকূল-জুড়ে বয়ে যাওয়া ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ধরনের দুর্যোগ দেখা দিলে যতটা সম্ভব আগেভাগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। নিজ এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের আগে ও পরে যা যা করবেন এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক ড. দিলারা জাহিদ।
ঘূর্ণিঝড়ের আগে করণীয়
- ঝড় আসার আগে নিজের বাড়ির দিকে নজর দিন। প্রথমে নিশ্চিত হোন বাড়ির কোনো টাইলস, দরজা বা জানালায় ত্রুটি রয়েছে কি না। ত্রুটি থাকলে তা আপাতত যতটা দ্রুত সম্ভব মেরামত করে নিন। অনেক সময় সামান্য এই ত্রুটির কারণে বড় দুর্ঘটনা ঘটে।
- অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। মরা বড় গাছ সরিয়ে ফেলুন। বাড়ির নর্দমা পরিষ্কার রাখুন। খোলা ইট, পাথর বাড়ির আশপাশ থেকে সরিয়ে ফেলুন।
- ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিদ্যুৎ-বিভ্রাট ঘটতে পারে। তাই আগে থেকে হারিকেন বা চিমনিতে কেরোসিন ভরে রাখুন। হাতের কাছাকাছি রাখুন দিয়াশলাই। সবচেয়ে ভালো হয় টর্চলাইট বা অন্য কোনো আলোর উৎস রাখা। বিদ্যুৎ গেলেও যেন আপনাকে খোঁজার জন্য ব্যতিব্যস্ত হতে না হয়। মোবাইলের চার্জ যেন অল্প না থাকে।
- আবহাওয়া অধিদফতরের আপডেট সম্পর্কে খোঁজ রাখুন। কোনো প্রয়োজন না থাকলে বাইরে থাকবেন না।
- ঘরে পশুপাখি থাকলে বা বৃদ্ধ-বয়োজ্যেষ্ঠ, অন্তঃসত্ত্বা কিংবা শিশুরা থাকলে এবং বাড়িতে ঝুঁকি থাকলে নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান।
- বাড়ি নদীর আশপাশে হলে এবং বাড়ির অবস্থা ভালো না হলে কাছের কোনো স্কুল, বাড়ি বা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
- ঘরের মধ্যে একটি পাকা গর্ত তৈরি করে নিন। জলোচ্ছ্বাসের আগে এই পাকা গর্তের মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে সিমেন্ট দিয়ে তা বন্ধ করে দিন। যাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় এসব অক্ষত থাকে।
- বিশুদ্ধ পানির অভাবে এ সময় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। তাই সঙ্গে রাখুন খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও ফিটকারি।
- বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি মজুত করে রাখুন।
- যদি ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাড়িতে ফিরতে না পারেন, তাহলে রাস্তায় অবস্থান করা একেবারেই নিরাপদ নয়। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান।