তালায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষে সফল কলেজ শিক্ষক তৌহিদুজ্জামান। তিনি সাত বিঘা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে ড্রাগনের চাষ করে সফল হয়েছেন। চলতি বছর আরো পাঁচ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে ড্রাগনের আবাদ সম্প্রসারণ করছেন। তৌহিদুজ্জামান গ্রীষ্মকালীন ফলটি শীতকালেও সমানভাবে ফলাতে এরই মধ্যে জমিতে চীন থেকে আমদানি করা বিশেষ বৈদ্যুতিক বাল্ব স্থাপন করেছেন। শীতে ড্রাগন আবাদে সফলতা পেলে তাকে দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হবেন, এমনটাই মনে করছেন কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তৌহিদুজ্জামানের ড্রাগনবাগানে দেখা গেছে, সাত বিঘার খেতে প্রায় পাঁচ ফুট উচ্চতায় ১ হাজার ৪০০ কংক্রিটের খুঁটি বসানো রয়েছে। খুঁটিগুলো পরস্পর থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বসানো। প্রতিটি খুঁটি ঘিরে রয়েছে চারটি করে হূষ্টপুষ্ট ড্রাগনগাছ। চারদিকে যেন সবুজের সমারোহ। গাছগুলোতে ফুল ফোটাতে বাঁশের আলাদা অন্তত ২০০ খুঁটি পুঁতে তার টানিয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ৮০০ বাল্ব স্থাপন করা হয়েছে। তৌহিদুজ্জামান জানান, ইউটিউব দেখে শখের বশে ২০২০ সালে নিজ এলাকায় তিনি প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। তার খেতের নাম ‘ড্রাগন ভ্যালি’। সাত বিঘা জমি বার্ষিক ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ইজারা নিয়ে এই চাষ করেন। এতে সাফল্যের পর আরো পাঁচ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে ড্রাগনের আবাদ সম্প্রসারণ করছেন। আলো দেওয়ায় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এসব বাল্ব ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সরাসরি চীন থেকে আমদানি করেছেন তিনি। বাল্বগুলো প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা ও ভোররাত ৪টা থেকে সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত জ্বালিয়ে রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমার ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বাগানে। শীতকালীন ড্রাগনের আবাদে পুরোপুরি সফল হলে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো আয় হতে পারে।’
উপজেলা উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা পলাশ কান্তি রায় বলেন, উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ড্রাগন চাষের উদ্যোক্তা অধ্যাপক তৌহিদুজ্জামান। দেশে এখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে শীত মৌসুমে ড্রাগনের আবাদ হলেও তালায় এটি প্রথম। তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, তালার তৌহিদুজ্জামান তার বাগানে ইলেকট্রিক বাল্ব ব্যবহার করছেন। এতে সারা বছর ড্রাগন চাষ করা যাবে। তিনি একাধিকবার ঐ বাগান পরিদর্শন করেছেন বলেও জানান।