জমির সীমানা নিয়ে দ্বন্দ্বের পর থেকে প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের ভয়ে পাঁচ মাস ধরে বাড়ি ছাড়া আছেন ছয় পরিবারের ২৬ সদস্য। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কাছে ধর্না দিয়ে সমাধান আসেনি। প্রতিকার মেলেনি থানায় অভিযোগ দিয়েও।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফেরার আকুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। গুরুদাসপুর পৌর সদরের খলিফা পাড়া মহল্লায় একটি বাড়িতে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
পাঁচ মাস ধরে সেখানেই পরিবারের ২৬ সদস্য নিয়ে ভুক্তভোগী জাহিদুল, হটু মণ্ডল, রুহুল, রতন, সোহেল ও তাদের পিতা দেরেস মণ্ডল আশ্রয় নিয়েছেন। ভুক্তভোগীরা ও তাদের প্রতিপক্ষ মতিউর তালুকদার পৌর সদরের চাঁচকৈড় পুড়ান পাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী পরিবারের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিপক্ষের নির্যাতনের শিকার হোসেল মণ্ডল বলেন, ঠুনকো বিষয় নিয়ে প্রতিবেশী মতিউর তালুকদারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। সেই দ্বন্দ্ব সংঘর্ষে রূপ নেয়। এরপর প্রতিপক্ষের দেওয়া মিথ্যা মামলায় হাজতবাসের পরও নিজেদের ঘর-বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তারা।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় ৫ মাস আগে বাড়ির সীমানা নিয়ে ভুক্তভোগী মতিউর তালুকদারের স্ত্রী সাথী বেগমের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দফায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। গুরুত্বর আহত হন মতিউর রহমানের স্ত্রী সাথী বেগম। ওই ঘটনায় মতিউর রহমানের দায়ের করা মামলায় হাজতবাস করেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আসার পর আর নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারেননি ভুক্তভোগীরা।
বৃদ্ধ দেরেস মণ্ডল নিজেদের বসতবাড়িতে ফেরার আকুতি জানিয়ে বলেন, বাড়িতে ফিরতে গেলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন প্রতিপক্ষ গোলাপ তালুকদার, মাসুদ রানা, ছাইদুল ইসলাম, মাহাবুব ও মতিউর রহমান। এমনকি নারীরা বসতবাড়িতে গেলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে। এসব কারণে তারা ভয়ে নিজেদের বাড়িতে যেতে পারছেন না। নিজেদের বাড়িতে ফিরতে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
প্রতিপক্ষের পক্ষে ছাইদুল ইসলাম ও মাসুদ রানা তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক কারণে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এ নিয়ে তারা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। বাড়িতে ফিরতে প্রতিপক্ষকে বাধা নিষেধ করেননি তারা।
গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। অভিযোগকারীদের খুব দ্রুত নিজেদের বাড়িতে তুলে দেওয়া হবে।