রাজশাহীর বাঘায় দলিল লেখক সমিতির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সোমবার (১০ জুন) দুপুরে উপজেলা সদরে অবস্থিত সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার একপর্যায় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আহতরা হলেন পারভেজ (৩০), শাহিন আলম (৪৫), পারভেজ আলী (৩১), সাজিদ (২০), মাজেদুল (২২), জয় (১৯), রাব্বী (৩০), আনজারুল (৩৮), সনেট (৪০) ও সাইফুল ইসলাম (৪৩)। এদের মধ্যে জয় এর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য রামেক হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক উম্মে হাবিবা বৃষ্টি। বাকি পাঁচজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরেছে।
জানা গেছে, বাঘা দলিল লেখক অফিসে প্রায় দুই শত দলিল লেখক রয়েছে। এদের মধ্যে একটি সমিতি বিদ্যমান। এই সমিতির মধ্যে সম্প্রতি পূর্বর কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মিল্টনকে বাদ দেওয়া হয় এবং সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকারের পদ বহাল রেখে মিল্টনের স্থলে পূর্বের পরিচালিত কমিটি সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান পিন্টুকে নতুন করে সভাপতি নিযুক্ত করা হয়। এ নিয়ে দলিল লেখক সমিতি ও স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠন আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয়। এই বিভাজনে একপক্ষে নেতৃত্ব দেন প্রায় ছয় বছর পূর্বে দায়িত্বশীল কমিটির সাবেক সভাপতি স্বপন সরকার এবং অপরপক্ষে নের্তৃত্ব দেন নয়া সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু।
সরেজমিন দেখা গেছে, সোমবার সকাল ১০টার পর থেকে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সামানে নয়া সভাপতি শাহিনুর রহমান পিন্টু ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন সরকারের লোকজন অবস্থান নেয়। অপরদিকে সাবেক সভাপতি স্বপন সরকারের নেতৃত্বে বাঘা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাইনুল ইসলাম মুক্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুরুজ জামানসহ প্রায় শতাধিক লোকজন জমি রেজিষ্টির কার্যালয় দখল কারার নিমিত্তে রাস্তার বিপরীত পাশে অবস্থান নেয়। এদিকে সময় যখন দুপুর সাড়ে ১২টা, ঠিক সেই মুহূর্তে ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম মুক্তা ও সুরুজ ৫-৬ জন যুবককে সঙ্গে করে রাস্তা পার হয় এবং অপরপক্ষের সামনে এসে কিছু একটা বলার চেষ্টা করে। এ সময় উভয়পক্ষ থেকে সোর-গোল শুরু হয়। শুরু হয়, ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। তাৎক্ষণিক গোপন জায়গা থেকে বের করে আনা হয় ভারি-ভারি ধারালো অস্ত্র। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সাবেক সভাপতি স্বপন সরকার জানান, নতুন কমিটি এসে ঈদকে সামনে রেখে কিছু দলিল লেখককে ঈদ বোনাস দেয়নি। এ কারণে এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
শাহিনুর রহমান পিন্টু বলেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে ঈদ বোনাস দেওয়া হচ্ছে। আগামী কালকে এটি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই স্বপনের নেতৃত্বে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
বাঘা থানা ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, দলিল লেখক সমিতির কমিটি রদবদল নিয়ে জটিলতা-সৃষ্টি হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্রে করে তাদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। একে-অপরের ওপর হামলা চালায়। পরে আমরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। কোনো পক্ষ থেকে অভিযোগ আসেনি।