সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

রাজশাহীতে বিজয় উৎসব থেকে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট

আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৪, ২১:০৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে মেতে ওঠে আন্দোলনকারীরা। সোমবার (৫ আগস্ট) বিকেল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এমনকি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, ভিন্নমতের মানুষ, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকরাও এই সহিংসতা থেকে রক্ষা পাননি। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী শহরে স্থানীয় দৈনিক সোনারদেশ, দৈনিক সানশাইন, দৈনিক উত্তরা প্রতিদিন, অনলাইন পোর্টাল সিল্কসিটি নিউজ এবং পদ্মাটাইমসের অফিসে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া জেলার বাঘা উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক ইত্তেফাকের স্থানীয় সংবাদদাতা নূরুজ্জামানের বাড়িতেও হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। 

স্থানীয়দের তথ্যমতে, নূরুজ্জামানের বাড়ি উপজেলা সদরের আমোদপুর গ্রামে অবস্থিত। গত ৫ আগস্ট বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর প্রচারের পরপরই স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসহ তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী প্রতিরোধ করে। তবে এর আগে বাড়ির সামনে মসজিদ সংলগ্ন শেখ রাসেল স্মৃতি সংঘ ক্লাবটি আরেকটি গ্রুপ ভাঙচুর করে।

ভুক্তভোগী নূরুজ্জামান জানান, 'গত ৫ আগস্ট বিকেলে তার বাড়ি-ঘর ভেঙে লুটপাট করা হয়। বাড়িতে খাবার প্লেট পর্যন্ত নেই। তিনটি এসি, চারটি টিভি, দুটি ফ্রিজ, একটি ঝাড়বাতি, দুটি ইলেকট্রিক মিটার, দুটি কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ, ১০টি রুমের জানালা-দরজা, কাপড়চোপড়, পানির লাইন, মসজিদ সংলগ্ন মুজাইক করা বাবা-মার কবরস্থান এবং বাড়ির সব লাইট, সিলিং ফ্যান, রান্নাঘর ও বাথরুমসহ সমস্ত ফার্নিচার ভাঙচুর করা হয়। প্রাণের ভয়ে নূরুজ্জামান, তার স্ত্রী ও ছেলে এখনও বাড়িতে ফিরতে পারেননি। জীবন বাঁচাতে তারা গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধ কোটি টাকা বলে তিনি জানান।'

তিনি আরও জানান, 'আমি কোনও অপরাধ করেছি বলে মনে করি না। আমার ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। রিপোর্ট কারো পক্ষে বা বিপক্ষে যাওয়ার কারণে এই হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। আমি সজ্ঞানে কারো কোনও ক্ষতি করিনি। সন্ত্রাসীরা যখন আমার বাড়ি ভাঙচুর করে, তখন আমি পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ নিজেদের অসহায় দাবি করে কোনও সাহায্য করতে পারেনি।'

ইত্তেফাক/টিএইচ