বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা, স্বামী পলাতক

আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:১৩

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় সাথি খাতুন নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১০) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের করাতকান্দি গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন।

নিহত সাথি খাতুন ওই গ্রামের ইটভাটা শ্রমিক মো. সিমান্তর (৩০) স্ত্রী। একই ইউনিয়নের মালিয়াট গ্রামের মনছুর শেখের মেয়ে।

স্বজনদের অভিযোগ, পরকীয়ার জেরে স্বামী সিমান্ত তার স্ত্রী সাথি খাতুনকে রাতভর পিটিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে কেটে হত্যা করেছে। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছেন।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, প্রায় আট বছর আগে সিমান্তর সঙ্গে সাথি খাতুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের নাহিদ (৬) ও আফসানা (৪ মাস) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। তবুও প্রায় এক বছর আগে সিমান্ত তার খালাতো বোনের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত।

সমস্যা সমাধানে পারিবারিকভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। প্রায় সাতদিন আগে পরকীয়া প্রেমিকাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্যে সিমান্তকে ৯০ হাজার টাকা দেন শ্বশুর মনছুর। তারপরও রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ঘোরাফেরা করেন সিমান্ত। রাতে সাথি খাতুন তার স্বামী সিমান্তকে ঘুরাঘুরির বিষয় জানতে চান। তখন সিমান্ত তার স্ত্রীকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থান কেটে হত্যা করেন। পরে সাথির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে যান।

বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কুমারখালী থানা চত্বরে ভ্যানের ওপর রাখা হয়েছে বিথির প্যাকেট করা মরদেহ। ভ্যান ঘিরে স্বজনরা আহাজারি করছে। এ সময় বিথির শিশু ছেলে নাহিদ বলে, ‘মাকে আমার বাবা রাতে লাঠি দিয়ে মারছে। ব্লেড দিয়ে হাত-পাঁ কাটছে।’

সাথির বড় ভাই সবুজ বলেন, 'খালাতো বোনের সঙ্গে সিমান্তর পরকীয়া প্রেম ছিল। একাধিকবার সালিস হয়েছে এ নিয়ে। গত সপ্তাহে ৯০ হাজার টাকাও দিছি মিটমাটের জন্য। তবুও রোববার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে ঘুরতে গেছিল। সে খবর জানতে গেলে সিমান্ত আমার বোনকে পিটিয়ে ও ব্লেড দিয়ে কেটে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে পালিয়েছেন। আমি অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। থানায় মামলা করবো।'

এ দিকে সিমান্তের বাড়িতে স্বজন ও উৎসুক জনতার ভিড় দেখা গেছে। তবে পালিয়েছেন সিমান্তসহ তার বাবা-মা। সেজন্য তাদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিহত ব্যক্তির শরীরে একাধিক স্থানে আঘাতের ক্ষত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব বিশ্বাস।

ইত্তেফাক/আরএস
 
unib