যশোর কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জাড়িয়েছে দুই পক্ষ। এতে অন্তত ২২ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় উপজেলার চিংড়া বাজার সংলগ্ন সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে উভয়পক্ষের নয়জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির খবর পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন বাকিরা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা হলেন— উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সাঈদ, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউনুস হোসেন, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান রনি, ছাত্রদল নেতা সাগর, আকাশ, নাঈম, রকি, গোলাম মোস্তফা এবং সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলামের ভাই উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না ও কাজী মাজহারুল ইসলাম সোনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। গত ইউপি নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণের আপন বড় ভাই। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পরও তিনি স্বাভাবিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
তবে বুধবার সকালে এলাকার স্থানীয়দের মধ্যে একটি পক্ষ ইউপি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জড়ো হয়। এক পর্যায়ে তারা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। খবর পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে উপস্থিত অন্য পক্ষটি। এসময় দুই পক্ষে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর স্থানীয়রা ওই তালা ভেঙ্গে ফেলেন।
যশোর জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের মজনু হোসাইন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত আওয়ামী লীগ করায় স্থানীয়ভাবে শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করছেন। এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র—জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় চেয়ারম্যানের পক্ষের লোকজন এসে ছাত্র—জনতার উপর হামলা করে ১৪ থেকে ১৫ জনকে আহত করে।
সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বলেন, আমি নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। বুধবার ইউনিয়ন পরিষদ বন্ধ থাকার সুযোগে প্রতিপক্ষের লোকজন পরিষদের চেয়ারম্যানের রুমে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় এলাকার সাধারণ জনতা তালা খুলে দেওয়ার দাবিতে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জড়ো হলে তাদের উপর হামলা করা হয়।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা লাগানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।