চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মাসুদ হাসান রঞ্জু হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নারীসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছাত্রীর মায়ের পরকীয়া প্রেমের ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ায় গৃহশিক্ষক রঞ্জুকে খুন করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেপ্তার হুমায়ুন কবির।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে বদনপুর গ্রামের (ঘোলার বাগান) ভুট্টা ক্ষেত থেকে রঞ্জুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত রঞ্জু বদনপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে। তিনি মাস্টার্স সম্পন্ন করে চাকরিপ্রত্যাশী ছিলেন। এদিকে, ঘটনার পরদিন নিহত রঞ্জুর পরিবারের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) দামুড়হুদা মডেল থানা-পুলিশের সহযোগিতায় বদনপুর গ্রাম থেকে মৃত নূর ইসলামের ছেলে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিজানুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ সুলতানাকেও গ্রেপ্তার করা হয় এবং খুনে ব্যবহৃত কোদাল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, হুমায়ুন কবির অবিবাহিত এবং পেশায় কৃষক। একই এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী শাহানাজ সুলতানার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মাসুদ হাসান রঞ্জু শাহানাজের মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতেন। তাদের দুজনের ঘনিষ্ঠতার খবর ও মুঠোফোনে ধারণ করা কথোপকথন সম্প্রতি শাহানাজের স্বামীর পরিবারসহ স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে দেন। ৫-৬ দিন আগে শাহানাজ বিষয়টি হুমায়ুনকে জানিয়ে বলেন যে, মাসুদ হাসান রঞ্জুকে খুন না করতে পারলে তার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দেবেন। শাহানাজের চাপে হুমায়ুন গৃহশিক্ষক মাসুদ হাসানকে খুনের পরিকল্পনা করেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি হুমায়ুন ও রঞ্জু বদনপুর গ্রামের ঘোলার বাগান এলাকায় ভুট্টাখেতে সেচ দেওয়ার জন্য যান। দুপুর ১২টার দিকে হুমায়ুনের জমিতে সেচ দেওয়া শেষ হলে রঞ্জু তার জমিতে সেচ দেওয়া শুরু করেন। সেচ দেওয়া শুরু হলে ভুট্টাখেতের মধ্যে গিয়ে তা তদারকি শুরু করেন রঞ্জু। পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক হুমায়ুন পেছন থেকে কোদাল দিয়ে রঞ্জুর মাথায় আঘাত করেন। পরে আরও দুটি কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন এবং সেচনালার মধ্যে কোদাল রেখে বাড়িতে চলে আসেন।