ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারি ইউনিয়নে মেহেদি হাসান রাকিব হত্যা মামলার মূল আসামি ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। হত্যার ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মিজু, জিয়া ও পারভেজ। পরে তাদের ৩ দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
গত ১৭ মার্চ রাতে ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলার পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের ত্রিমোহনী বাজারের পল্টন মোড়ে মেহেদীকে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা-মুখ থেতলে হত্যা করা হয়। ওই সময় সাবিদ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। নিহত মেহেদি তললী গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
এ ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা মজিবর রহমান বাদী হয়ে পাগলা থানায় মামলাটি করেন। এতে জেলা যুবদলের সদস্য ইয়াছিন খানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার অনুসারী মিজু মিয়া, নজরুল শেখ, জাহিদুল, তাইজুল, মন্তাজ, বেলাল, জিয়াউল, মোফাজ্জল ও পারভেজের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহ জেলা যুবদলের সদস্য ইয়াছিন খান ও তার বাহিনীর সঙ্গে ফসলি জমির মাটি কাটা নিয়ে বিরোধ চলছিল যুবদল কর্মী মেহেদির। এ নিয়ে পল্টনমোড়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে যুবদল নেতা ইয়াছিনসহ তার অনুসারীরা হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা পাগলা থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান বাচ্চুর অনুসারী।
নিহত রাকিবের বাবা মজিবর রহমান ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে বলেন, গত ১৭ মার্চ রাতে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মেহেদিকে ইয়াছিনসহ অন্য আসামিরা নির্মমভাবে হত্যা করে। এর আগেও এই বাহিনী নিগুয়ারী ইউনিয়নে অনেক মাছের খামার দখল ও মাছ লুট করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইয়াছিনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার বাড়িতে গেলেও জানা যায়, ঘটনার পর থেকেই তার হদিস নেই।
এ ব্যাপারে পাগলা থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
এদিকে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা। এসময় রাকিবের হত্যার বিচার দাবি করেন তারা।
বাদি পক্ষের অভিযোগ, পলাতক আসামিরা বিভিন্ন নম্বর হুমকি, ধমকি দিচ্ছে। দ্রুত আসামীদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানান তারা।
এদিকে, রাকিবের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। সেখানে এক সমাবেশে নিহতের সহকর্মীরা বলেন, রাকিব হত্যার বিচার চাই। হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি প্রদান করতে হবে।
এ ব্যাপারে পাগলা থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এঘটনায় তিন জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমরা ইতোমধ্যে ইয়াছিনসহ অন্যান্য আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছি। তবে তারা সবাই পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।