বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

মিয়ানমারে নববর্ষে জান্তার বিমান হামলা, ২৩ বেসামরিক নিহত

আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৪৯

মিয়ানমারে চার দিনের থিংইয়ান বা নববর্ষ উৎসবের সময় বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে কমপক্ষে ২৬টি বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী। দ্য ইরাবতীর তথ্য অনুসারে, দেশটির ১৫টি অঞ্চলে এসব হামলায় সাতটি এলাকায় শিশু-কিশোরসহ কমপক্ষে ২৩ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে প্রায় ৫০ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান হামলার সময় অন্তত ছয়টি 'মঠ'কে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, যেখানে বৌদ্ধরা ঐতিহ্যগতভাবে পুরো উৎসবজুড়ে সমবেত হয়। ১৩ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত ম্যাগওয়ে, সাগাইং, মান্দালয় এবং বাগো অঞ্চল এবং রাকাইন, চিন এবং কারেন রাজ্যের ২০টি শহরতলিয়ে বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। যদিও স্থলভাগে কোনো যুদ্ধ হয়নি।

গত মঙ্গলবার বিকেলে একটি 'YAK-30' যুদ্ধবিমান কারেন রাজ্যের কাওকারেক টাউনশিপের কিয়ন্ডোর কাছে কান্নি গ্রামে মঠে বোমা হামলা চালায়। এতে চার শিশু এবং দুই প্রাপ্তবয়স্ক মারা যান। ১০ জন কিশোর ও সন্ন্যাসীসহ ১৭ জন আহত হন।

একই দিন একটি জান্তা যুদ্ধবিমান ফের কান্নি গ্রামে এবং নিকটবর্তী থায়েট তাও গ্রামে বোমা হামলা চালায়, যার ফলে একজন গ্রামবাসী নিহত এবং দুই শিশু আহত হয়।

পরদিন বুধবার একটি 'Y12' জান্তা বিমান একই শহরের মায়াউক কানমা ইয়েতে গ্রামে বোমা ফেলে। এর ফলে ৩৭ বছর বয়সী এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং দুই শিশুসহ আরও চারজন নিহত হন।

সাগাইং অঞ্চলের কানি টাউনশিপে শাসকগোষ্ঠী সাতটি গ্রামে বোমা ফেলার জন্য ড্রোন, প্যারামোটর এবং একটি 'Y12' বিমান ব্যবহার করে। থামিন চান গ্রামের মঠে তাদের হামলায় দুই কিশোর এবং দুই গ্রামবাসী নিহত হয়।

জান্তা আক্রমণ পর্যবেক্ষণকারী নাটোগি জার্নালের মতে, গত সোমবার বিকেলে মান্দালয় অঞ্চলের নাটোগি টাউনশিপে একটি জান্তা যুদ্ধবিমান কিউন ডাউক গ্রামের মঠে বোমা হামলা চালায়, যার ফলে ভবনগুলো পুড়ে যায়। এতে ৫৪ বছর বয়সী একজন সন্ন্যাসী, সাত বছর বয়সী শিশু এবং একজন গ্রামবাসী আহত হয়।

২৮ মার্চের ভূমিকম্পের পর থেকে বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার (NUG) এবং কিছু শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন উদ্ধার অভিযান এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া নিরাপদে সম্পন্ন করার জন্য একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে।

কিছুদিন পর ২ এপ্রিল থেকে ২০ দিনের ভূমিকম্প যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে জান্তা সরকার। কিন্তু তারা দেশজুড়ে বেসামরিক নাগরিক এবং প্রতিরোধ লক্ষ্যবস্তু উভয়ের উপর বিমান হামলা এবং কামান হামলা অব্যাহত রাখে।

এনইউজির মানবাধিকার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৮ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে মিয়ানমারের ১৫টি অঞ্চল ও রাজ্যের মধ্যে ১২টিতে ৯২টি গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা সরকার। যার ফলে ৭২ জন নিহত এবং ৯১ জন আহত হয়েছে।

ইত্তেফাক/এসকে