রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

দৌলতপুরে পদ্মায় অসময়ে তীব্র ভাঙন, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

আপডেট : ০৯ মে ২০২৫, ১৭:৪৮

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে অ-সময়ে পদ্মা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। মরিচা ইউনিয়নের ভূরকা, হাটখোলা ও কোলদিয়াড় এলাকায় প্রায় চার কিলোমিটার জুড়ে এই ভাঙন অব্যাহত আছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু জিও ব্যাগ ফেললেও এলাকাবাসী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙন রোধে হাটখোলা থেকে ভুরকা পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দুটি প্রকল্পের আওতায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ৩৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান।

এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, পদ্মায় কিছু দিনের মধ্যে নতুন পানি এলে ভাঙনের আগ্রাসী রূপ আরো বেড়ে যাবে। এক কিলোমিটার অংশের ভাঙন রোধের উদ্যোগে তারা খুশি হলেও উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন বাকি তিন কিলোমিটারের ভাঙন নিয়ে। তাঁদের দাবি, পুরো এলাকাতে সাময়িকভাবে ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ব্যবহারের পাশাপাশি দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে চলা ভাঙনে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা আবাদি জমি, বসতবাড়ি, কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঝুঁকিতে রয়েছে নদীর পাড় থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে থাকা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা।

পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান জানান, একসময় তাদের বাড়ি থেকে আবাদি জমিতে যেতে হাঁটতে হতো প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। এখন নদীর পাড়ে আসতে সময় লাগে মাত্র দুই মিনিট। চোখের সামনে পদ্মার আগ্রাসী ভাঙনে হারিয়েছেন চাষের জমি। দ্রুত ভাঙন রোধে টেকসই ব্যবস্থা না নিলে তাদের বসতভিটাও হারাতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমরা এক কিলোমিটার এলাকার ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছি। বাকি তিন কিলোমিটারের জন্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়েও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।’ 

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, আপৎকালীন জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ইত্তেফাক/এসএএস