শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এক দিনেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা

আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:১০

সবজি নিয়ে ক্রেতাদের অস্বস্তির মধ্যেই এবার যোগ হলো পেঁয়াজ। গতকাল শুক্রবার এক দিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশও (টিসিবি) গতকাল তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি তুলে ধরেছে। এদিকে সবজির পাশাপাশি হঠাত্ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। গতকাল বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টি ছিল ক্রেতাদের মুখেমুখে। কারণ, পেঁয়াজের দাম নিয়ে গত বছরের অস্বস্তি এখনো ক্রেতাদের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে। সে সময় ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যায়। ফলে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৩০০ টাকায় উঠে যায়। যা নিয়ে সারাদেশে রীতিমতো তোলপাড় হয়ে যায়।

এখন আবার নতুন করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আগের সেই আতঙ্ক কাজ করছে ক্রেতাদের। গতকাল রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এক দিন আগে যা যথাক্রমে ৪০ থেকে ৪৫ ও ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

হঠাৎ করে দাম বাড়া প্রসঙ্গে পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, প্রতি বছর সেপ্টম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারতের বেঙ্গালুর থেকে নতুন পেঁয়াজ দেশে আমদানি করা হয়। কিন্তু এ বছর সেখানে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে পেঁয়াজের আবাদ মার খেয়েছে। ফলে বেঙ্গালুরের সেই নতুন পেঁয়াজটা এবার আসবে না। মূলত এ কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ থেকে পুরনো পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু দাম বেশি পড়ছে। খুব তাড়াতাড়ি দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম বেড়েছে রসুনেরও। দেশি রসুন কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। আর আমদানিকৃত রসুন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। দাম বেড়েছে মসুর ডাল ও আলুর। বড় দানা মসুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, মাঝারি দানার মসুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৮৫ থেকে ১০০ টাকা ও ছোটদানা মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আলুর কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।

এদিকে এখনো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে চিচিঙ্গা, বেগুন, বরবটি, কাঁকরোল, পটোল, ঢ্যাঁড়শ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করল্লা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, টম্যাটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে, কচুর লতি ও কচুরমুখী ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শাকের দামও বেশি। পুঁইশাক ও লালশাকের একটা ছোট আঁটি (এক মুঠো) বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। লাউ, কুমড়ো প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়।

আগের মতোই সবজি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বন্যায় সবজিখেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সবজির দাম বেড়েছে। বন্যার উন্নতি হলেই বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়বে। তখন দাম কমে যাবে। পাহাড়ি ঢলে চার দফা বন্যায় বর্তমানে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ ৩৭টি জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ইত্তেফাক/কেকে