শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রাজশাহীতে টেন্ডার নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:১৪

রাজশাহীতে রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে সানোয়ার হোসেন রাসেল নামে এক যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অন্যদিকে বুধবার বিকেল চারটার দিকে পবা নতুনপাড়া কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সামনে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে স্থানীয় কলেজ ছাত্র ফাহিম (১৮) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ফাহিমের বন্ধু যুবরাজ (১৮) গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহত সানোয়ার হোসেন রাসেল নগরীর বোয়ালিয়া থানা আওয়ামী লীগের (পূর্ব) সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজার ছোট ভাই। নিহত ফাহিম পবা নতুনপাড়ার মোস্তফার ছেলে। তিনি নগরীর বরেন্দ্র কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাজশাহী রেলভবনে রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজা গ্রুপ এবং সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আনোয়ার হোসেন রাজা ও তার ছোট ভাই সানোয়ার হোসেন রাসেল ও সোনাসহ উভয়ে গ্রুপের অন্তত পাঁচজন আহত হয়। তাদের মধ্যে তিনজনকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রামেকের অপারেশন থিয়েটারে সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাসেলের মৃত্যু হয়। 

এছাড়া আওয়ামী লীগ কর্মী সুজন গ্রুপের অন্তত দুইজনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সুজন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র ও ২১ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলার নিযাম উল আযিম গ্রুপের কর্মী বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন: শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে কটূক্তি করায় ক্ষমা চাইলেন রাঙ্গা

স্থানীয়রা জানান, রেল ভবনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রাজা ও মহানগর আওয়ামী সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজন আলীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। দুপুরে রেল ভবনের সামনে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ গিয়ে রেলভবন ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়াম সংলগ্ন ভাংড়ির দোকানের সামনে থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করে।

নগরীর চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সংঘর্ষের পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠায়। সন্ধ্যায় রাসেল মারা যান। তবে সংঘর্ষের পরই রাব্বি নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।

এদিকে রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিকেলে দু’জন ছেলে ও দু’জন মেয়ে পবা নতুনপাড়ায় ছুরিকাঘাতে নিহত ফাহিমের বাড়ি সামনে আড্ডা দিচ্ছিল। এসময় ফাহিম, যুবরাজ ও সৈকত গিয়ে বলে তোমরা এখানে কি করছো। এনিয়ে তাদের মাধ্য বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় অজ্ঞাত চারজনের মধ্যে কেউ একজন ফাহিমকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এসময় ফাহিম ও যুবরাজ আহত হন। পরে সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাহিম মারা যায়। যুবরাজ বর্তমানে রামেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটিতে) রয়েছে।

গোলাম রুহুল কুদ্দুস আরো বলেন, এ ঘটনায় অপরাধীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। নিহত ফাহিমের মরদেহ রামেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এছাড়া আহত যুবরাজ চিকিৎসাধীন রয়েছে। এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

ইত্তেফাক/বিএএফ