বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিবচরে প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে জনবল সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২০, ২০:৫৫

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের বেহাল দশা। যেখানে ১১টি পদের মধ্যে ৩টিই রয়েছে শূন্য। এ ছাড়াও বিগত ৭ বছর ধরে ভেটেরিনারি সার্জন ছাড়াই চলছে সরকারি এই হাসপাতালটি। শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পর্যাপ্ত গবাদিপশু আছে, নেই শুধু সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল। উপজেলার পৌর এলাকার গুয়াতলা এলাকায় এ হাসপাতালটি অবস্থিত। একসময় হাসপাতালটি জরাজীর্ণ থাকলেও বর্তমানে আধুনিকরণের কাজ চলমান।

আজ বুধবার (২৯ জুলাই) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিবচরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাতের কাছে হাসপাতাল। সরকারি প্রণোদনা আর আর্থিক লাভের কথা বিবেচনা করে এখানে ইদানিং বেশ কিছু গরু, ছাগল ও পোলট্রি খামার গড়ে ওঠে। এদিকে বর্তমান সরকার যখন দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে বিভিন্ন উপায়ে যেমন, ছাগল পালন, হাঁস-মুরগিরর খামার, গবাদি পশু পালনে মানুষদের আগ্রহী করছেন। ঠিক সেই সময়ে সরকারি প্রাণিসম্পদ অফিসের প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে উপজেলার এই প্রাণিসম্পদ হাসপাতালটির কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্থবির হয়ে পড়েছে।

শিবচর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটিতে ১১টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে সাত বছর ধরে শূন্য একজন ভেটেরিনারি সার্জন, ৪ বছর ধরে শূন্য একজন ড্রেসার ও শূন্য রয়েছে উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (প্রাণি ও স্বাস্থ্য) পদটি। এ ছাড়াও আগামী মাসে শূন্য হতে যাচ্ছে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদটিও।

আরও পড়ুন: এফডিসিতে ৫ গরু কুরবানি দিচ্ছেন পরীমনি

জানা যায়, এখানে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ১৮ জন বিভিন্ন সেবা যেমন কৃত্রিম প্রজনন, ছাগলের ঠাণ্ডা ও কাশিসহ ভ্যাক্সিন দিতে আসেন। তবে বিভিন্ন কর্মচারী ও উপ-সহকারী কর্মকর্তারাই চিকিৎসা দিচ্ছেন। অনেকে হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে গ্রামের বিভিন্ন হাতুড়ে ডাক্তার দ্বারা তাদের পশু চিকিৎসা করাচ্ছেন।

মাদবেরচর এলাকা থেকে আসা সাহেব আলী বলেন, ‘আমরা গরু নিয়ে আসলে এখানে যারা আছে তারাই চিকিৎসা দেন। আমরাতো এতো কিছু বুঝিনা।’

শিবচর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সরোয়ার হোসেন শিকদার এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘শিবচর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস কর্তৃক এখানে আনীত গাবাদি পশু ও হাস-মুরগির চিকিৎসা দিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের এখান ভেটেরিনারি সার্জন পদটি দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। ভেটেরিনারি সার্জন একমাত্র চিকিৎসা তার অনুপস্থিতিতে এ কার্যক্রমকে চালিয়ে নিতে অনেকটা হিমশিম খেতে হয়। পাশাপাশি আমাদের এখানে উপ-সহকারী কর্মকর্তা ( প্রাণি স্বাস্থ্য) কর্মকর্তাও গতমাসে অবসরে গেছেন এবং ড্রেসার পদটিও প্রায় চার বছর ধরে খালি রয়েছে। এরপর দেখা যায় আমাদের এখানে যেসকল প্রাণি চিকিৎসার জন্য আনে আমিসহ এখানে যারা আছে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিলেও কর্যক্রমটি পরিচালনার জন্য ভেটেরিনারি সার্জন পদটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। যদি শূন্য পদগুলোতে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে প্রাণিগুলোকে ভালোভাবে সেবা দিতে সক্ষম হবো’।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা একেএম আনোয়ারুল হক মুঠোফোনে জানান, ‘প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভেটেনারি সার্জনের পদটি মূলত বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসের পদ। অনেকদিন ধরেই পদগুলো খালি রয়েছে। ইতিমধ্যে আমি কয়েকবারই চাহিদা দিয়েছি। তারপরও বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবো।’


ইত্তেফাক/এএএম