ঝালকাঠিতে নির্মাণ শ্রমিক আলিম হাওলাদারের (১৮) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় শ্রমিকের মা মাকসুদা বেগম বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তাস খেলতে বাঁধা দেওয়ায় অন্য শ্রমিকরা তাকে মারধর করে মাথা মাটিতে পুতে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার আসামী ৮ শ্রমিককে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, তাস খেলতে নিষেধ করায় হত্যা করা হয়েছে আলিম হাওলাদারকে। শনিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার দক্ষিণ রাজপাশা গ্রামের নির্মাণাধীন সড়কের পাশে একটি নালা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। রবিবার দুপুরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ৮ শ্রমিককে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আলিম হাওলাদার ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার আইয়ুব আলী হাওলাদারের ছেলে।
হত্যা মামালার আসামিরা হলো বাচ্চু খলিফা (৩২), নয়ন ব্যাপারী ওরফে আকবর (২২), মাসুম হোসেন হালাদার (২০), খালেক হাওলাদার (৭০), রিজান হোসেন হাওলাদার (১৮), মোতালেব হোসেন হাওলাদা (৫৫), মোফাজ্জেল তালুকদার (৫৭)। এদের সকলের বাড়ি পৌরসভার কৃষ্ণকাঠি এলাকায়। এছাড়াও আরেক জন আসামি নলছিটির তৌকাঠি গ্রামের রাজিব খান (২৫)। পুলিশ তাদেরকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের রাজপাশা সোনাপুর সড়ক নির্মাণ কাজে আলিম হাওলাদারসহ ১০ জন শ্রমিক কর্মরত ছিল। কাজ শেষে শুক্রবার রাতে সোনাপুর শ্রমিকদের থাকার স্থানে সবাই ঘুমাতে যায়। সেখানে গিয়ে না ঘুমিয়ে কিছু শ্রমিক তাস খেলায় আলিম প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে তাস খেলা শ্রমিকরা আলিমকে মারধর করে পাশের একটি নালায় মাটিতে মাথা পুতে হত্যা করেছে বলে বাদী এজাহারে জানান। শনিবার সকালে আলিমকে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে শ্রমিকরা অপপ্রচার চালায়। বিকেলে সোনাপুর এলাকার একটি নালায় আলিমের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এ ব্যাপারে শেখেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আব্দুল মালেক জানান, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় ওই শ্রমিকের নাক থেকে রক্ত ঝরছিল। তার গলায়ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃতের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।'
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শোনিত কুমার গায়েন বলেন, 'আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।'
ইত্তেফাক/জেডএইচডি