শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঘুমন্ত তুহিনকে কোলে করে নিয়ে আসেন বাবা খুন করেন চাচা

আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০২:০৯

ছেলেকে খুনের জন্য পাষণ্ড বাবাই ঘুমন্ত তুহিনকে কোলে করে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়েছিল! আর চাচা নাছির ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার নারকীয় কায়দায় খুন করে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তুহিনকে এভাবে খুন করা হয় বলে পুলিশকে জানান বাবা ও চাচা। সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন তুহিনের চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তুহিন হত্যার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সুনামগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।


মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের কাছে শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বাবা ও চাচা। তুহিনকে বাবা ও চাচা মিলেই খুন করেছেন। রবিবার রাত আড়াইটার দিকে বাবা আব্দুল বাসির তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে যান। পরে চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার তুহিনকে খুন করেন। তুহিনের কান ও লিঙ্গ কেটে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনায় তুহিনের বাবাও জড়িত। তার সামনেই শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে দিরাই থানায় হত্যা মামলা করেন তুহিনের মা মনিরা বেগম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিরাই থানার এসআই আবু তাহের মোল্লা জানান, মামলায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তারা হলেন তুহিনেরে বাবা আব্দুল বাসির, তিন চাচা জমশেদ আলী, মোছাব্বির আলী ও নাছির উদ্দিন এবং চাচাতো ভাই শাহরিয়ার হোসেন। এদের মধ্যে আব্দুল বাসির, চাচা জমশেদ আলী ও মোছাব্বির আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। বিকালে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামকান্ত সিনহা তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন: বন্ড জালিয়াতিতে পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় তুহিনের বাবাসহ থানায় নিয়ে পাঁচ জনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় মিজানুর রহমান জানিয়ে ছিলেন, তুহিন হত্যায় পরিবারের লোকজন জড়িত। তুহিন হত্যাকাণ্ডে তার পরিবারের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। তুহিনকে কেন মারা হয়েছে, কীভাবে মারা হয়েছে, কয়জনে মেরেছে পুরো ঘটনা জানা গেছে কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলব না। তবে শিগিগরই আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রেকর্ড দিয়েই আসামিদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার তাদের আদালতে নিয়ে জবানবন্দি নেওয়া হয়।

দিরাই (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার বেলা ২টায় থানা পয়েন্টে উপজেলা খেলাঘর আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, বাউল শিল্পীসহ সব শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।

ইত্তেফাক/এসি