শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ভিন্ন উদ্যোগ ‘ইচ্ছে পূরণ’ 

আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০:৪৭

সমাজের নানা অসঙ্গতি আর অন্যায়ের বিরু‌দ্ধে প্রতিবাদী গান গেয়ে তিনি আলোচিত। আবার কখনো মধ্যবিত্তদের জীবন সংগ্রামের গল্প গানের ছন্দে তুলে ধরার জন্য আলোচিত। এছাড়া গরিব, পথশিশু আর খেটে-খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা ভাসেন তিনি।

বলছিলাম কুঁড়েঘর ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠা সংগীতশিল্পী তাশরীফ খানের কথা। ছোটকাল থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল তার। 

কয়েক বছর আগে একক প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেন ‘কুঁড়েঘর’ ব্যান্ড। শুরুর দিকে বড় ভাইয়ের লিরিকে সুর দিতেন তাশরীফ। দিন দিন বাড়তে থাকে তার টিমের সদস্য। আজ দেশের জনপ্রিয় একটি ব্যান্ডে পরিণত হয়েছে ‘কুঁড়েঘর’। 

এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৫টির বেশি মৌলিক গান প্রকাশ করেছে ব্যান্ডটি। প্রতিটি গানই অল্প সময়ের মধ্যে শ্রোতা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজনদের প্রশংসায় ভাসছে তাশরীফের সেসব গান। তরুণ প্রজন্মের কাছে তাশরীফ গায়ক পরিচয়ে পরিচিত হলেও খেটে-খাওয়া অসহায় মানুষের কাছে আরেকটি পরিচয় রয়েছে তাশরীফের। 

তাহলো ‘মানবদরদি তাশরীফ’। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই তাশরীফ একজন মানবপ্রেমী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। গরিব, অসহায়, পথশিশু আর ভিক্ষুকদের একদিনের ইচ্ছে পূরণের জন্য তাশরীফ ‘ইচ্ছে পূরণ’ নামে একটি ব্যতিক্রমী প্রজেক্ট চালু করেছেন। যেখানে একদিনে ভিক্ষুক, পথশিশু আর গরিবদের সকল ইচ্ছে পূরণ করা হয়। এ প্রসঙ্গে তাশরীফ বলেন, ‘আমি নিজের অবস্হান থেকে সব সময় চেষ্টা করি যতটুকু পারা যায় মানুষকে সাহাঘ্য সহযোগিতা করতে। 

‘ইচ্ছা পূরণ’ ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্নের একটা প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে মূলত আমি গরিব পথশিশু, বৃদ্ধ কিংবা যে কোনো বয়সের অসহায়দের একদিনের সবধরনের ইচ্ছা পূরণ করে থাকি। সেইসঙ্গে চেষ্টা করি তাকে এমন একটা কাজের ব্যবস্হা করে দিতে যার মাধ্যমে তিনি আয় রোজগার করে সংসার চালতে পারেন।’ তাশরীফ মানুষকে সহযোগিতা করতে শিখেছেন বাবার কাছ থেকে। তাশরীফ বলেন, ‘ছোটকালে আব্বুকে দেখেছি কেউ সাহাঘ্যের জন্য এলে বা গায়ে বস্ত্র না থাকলে, আব্বু নিজের জামা দিয়ে দিতেন। গত বছর লকডাউনে খেটে-খাওয়া মানুষ খাবারের অভাবে কষ্টে দিনপাতিত করেছে। 

তখন ‘আমরা চাইলেই সম্ভব’ প্রজেক্টের মাধ্যমে ডোনেশন কালেক্ট করে ‘তাশরীফ স্কোয়াড’র মাধ্যমে অনেকের ঘরে প্রায় চৌদ্দ লাখ টাকার খাদ্যসামগ্রীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিয়েছি।’ তাশরীফ বলেন, ‘সেটি ছিল সবচেয়ে কঠিন প্রজেক্ট। কারণ অল্প সময়ে এত মানুষের সাড়া পেয়েছি যে, এটি ঠিকঠাকভাবে করতে পারব কি না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। 

তবে সবার সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে। সেই প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রায় ১৪ শ’ পরিবার উপকৃত হয়েছিল। আর ‘তাশরীফ স্কোয়াড’ প্রজেক্টের জন্য মানুষের কাছ থেকে অনেক বেশি ডোনেশন নিতে হয়েছে। আমি শতভাগ চেষ্টা করেছি, সঠিকভাবে টাকাটা মানুষের সাহাঘ্যে ব্যয় করতে।

বলা যায়, আমি মানুষের বিশ্বাসের মূল্য রেখেছি।’ গানের পাশাপাশি তাশরীফ সারাজীবন অসহায়দের সাহাঘ্য সহযোগিতা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে একটি এতিমখানা ও বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করতে চান। 

ইত্তেফাক/এএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন