শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শেষ হলো ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০

আপডেট : ১২ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৩৭

গত ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০-এর সমাপনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গভবন থেকে যোগদান করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। 

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এমপি, রুশ ফেডারেশনের তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের যুব বিষয়ক মন্ত্রী তিমুর সুলেইমানোভ, মালদ্বীপের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী আহমেদ মাহলুফ, আইসিওয়াইএফ সভাপতি তাহা আয়হান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘যুবকরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে কোনো কিছু অর্জন করতে পারে। বাংলাদেশে তরুণদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, এতে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ জনসংখ্যাগত সুবিধায় রয়েছে। বাংলাদেশ গত এক দশক ধরে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং জাতির উত্থান অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুবকরা সবসময়ই উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে, ঠিক যেমনটি তারা কোভিড-১৯ মহামারির সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় কাজ করেছে। বিশ্ব দ্রুত বদলে যাচ্ছে, তরুণরাই অগ্রগতির বাহক এবং তারা এ পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।’ 

ঢাকাকে ওআইসি যুব রাজধানী ২০২০ হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য ওআইসি এবং ইসলামিক কো-অপারেশন ইয়ুথ ফোরামের (আইসিওয়াইএফ) প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অভিন্ন বিশ্বাস ও অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওআইসি সদস্য দেশগুলো সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সুন্দর আগামী গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময় এই অনুষ্ঠানটি ইভেন্টগুলোকে আরও মর্যাদাপূর্ণ করেছে।’ 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আজকের তরুণ যুবারাই আগামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কর্ণধার। তাদের হাতে হাত রেখেই এগিয়ে যাবে পুরো পৃথিবী। চলমান করোনা পরিস্থিতি সামলে উঠতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। আর আজকের তরুণরাই পারে এই ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে।’ 

ছবি: ইত্তেফাক

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বিজয়ের এই মাসে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের। স্বাধীনতার পর থেকেই ইসলামের কল্যাণে জাতির পিতা বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তারই দেখানো পথে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিভিন্ন সময় একাধিক উদ্যোগ নিয়েছেন এবং শক্ত হাতে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের সব ইসলামিক দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশ সুসম্পর্ক ধরে রেখেছে।’ 

বিশেষ অতিথি এবং রুশ ফেডারেশনের তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের যুব বিষয়ক মন্ত্রী তিমুর সুলেইমানোভ বলেন, ‘অংশগ্রহণকৃত তরুণদের দক্ষতা এবং মনোবল আমাদের বারবার মুগ্ধ করেছে। মহামারির সব বাধাকে পিছনে ফেলে অনুষ্ঠানটির পিছনে যে বিশাল টিম অদম্যভাবে কাজ করে গেছে, তাদের স্যালুট জানাই। বাংলাদেশের সাথে আমাদের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো দৃঢ় হবে বলে মনে করি।’ 

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকতার হোসেন বলেন, অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদসহ উপস্থিত সবাইকেসহ আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমি বিশ্বাস করি, তারা নিজেরাও অনেক কিছু শিখেছে এবং তাদের দক্ষতাকে পরিপূর্ণভাবে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পেরেছে। 

ওআইসির প্রেসিডেন্ট তাহা আয়হান বলেন, ‘করোকালীন পরিস্থিতি থাকা সত্বেও ঢাকা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পুরো আয়োজনটি সম্পন্ন করেছে। এজন্য আমি সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। এত চ্যালেঞ্জের পরও তারা আয়োজনের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।’ 

মালদ্বীপের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী আহমেদ আহমেদ মাহলুফ বলেন, ‘বাংলাদেশ গত এক দশক ধরে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং জাতির উত্থান অন্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সকল যুবাদের জানাতে চাই, তোমাদের এই অদম্য ইচ্ছাশক্তি যেন আজীবন অটুট থাকে। তরুণদের লক্ষ্য অর্জনে ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল নিরলসভাবে কাজ করে যেতে আন্তরিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ 

অনুষ্ঠানে আইসিওয়াইএফ কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীনও আয়োজক দেশ বাংলাদেশকে ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০ সুন্দরভাবে আয়োজন করায় ‘Most Diligent and Resilient Performance Award’—এ ভূষিত করেছে। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল আইসিওয়াইএফ সভাপতির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। 

এছাড়া অনুষ্ঠানে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’র জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়

ইত্তেফাক/এএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন