বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব, বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষককে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি

আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৩৯

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কৃষি বিভাগের সভাপতি এইচ এম আনিসুজ্জামানকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব, পরীক্ষার ফলাফলে অনিয়মসহ নানান অভিযোগ ওঠার পর তাকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাহার আলীকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী কৃষি বিভাগের বর্তমান সভাপতি এইচ এম আনিসুজ্জামানের স্থলে ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাহার আলীকে সভাপতির অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলো।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. মোজাহার আলী বলেন, পত্র-পত্রিকায় খবর আসা এবং শিক্ষার্থীদের আবেদনের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এইচ এম আনিসুজ্জামানকে সভাপতির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্তের পরে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তাকে পুনরায় সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হবে।

সম্প্রতি কৃষি বিভাগের এক ছাত্রীকে শিক্ষক এইচএম আনিসুজ্জামানের কুপ্রস্তাবসহ অশ্লীল কথাবার্তার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠতে থাকে। শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানিসহ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষার নম্বরপত্রে গড়মিল করা, উত্তরপত্রে ইচ্ছা মাফিক নাম্বার বসানো, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকিসহ হিসাব-নিকাশে অসমতার অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (২৩ জানুয়ারি) এ সকল অভিযোগে শিক্ষক আনিসুজ্জামানের অব্যাহতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের নিকট চিঠি দেন শিক্ষার্থীরা। চিঠিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, 'শিক্ষক এইচএম আনিসুজ্জামান বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্যভাবে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষার নম্বরপত্রে গড়মিল করা, উত্তরপত্রে ইচ্ছা মাফিক নাম্বার বসানো, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকিসহ হিসাব-নিকাশে অসমতার ঘটনা তৈরি করেছেন। সর্বশেষ বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির বিষয় উঠে এসেছে। ফলে একজন বিতর্কিত শিক্ষক ও বিভাগীয় প্রধানের অধীনে আমরা সকল প্রকার শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য মনস্থির করেছি।' 

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ডিন ড. মো. মোজাহার আলী সেসময় বলেন, ঐ শিক্ষকের বিষয়ে পরীক্ষা বিষয়ক অনিয়মের বিষয়টি সত্য। পরে তা শিক্ষকদের সম্মতিতে সংশোধনও করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিষয়ে ভুক্তভোগীর কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগের শিক্ষক আনিসুজ্জামানের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছি। নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরে সোমবার (২৪ জানুয়ার‍্যি) আনিসুজ্জামানের শাস্তি চেয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল ও শোডাউন করে ছাত্রলীগ।

অভিযোগ ও অব্যাহতির ব্যাপারে জানার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচএম আনিসুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইত্তেফাক/এসটিএম