স্বপ্ন দেখেন তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। প্রত্যাশা—এদেশ থেকেও একদিন গুগল, মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানের সিইও তৈরি হবে। আর এই স্বপ্ন কিংবা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেই তিনি স্থির থাকেননি। তা পূরণের দায়িত্বও নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন এবং তার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সোহাগ ৩৬০, বেসিক ভাই-এর মতো প্ল্যাটফর্ম।
বলছিলাম তরুণ ডিজিটাল উদ্যোক্তা সোহাগ মিয়ার কথা। আইটি নিয়ে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। তার প্রধান উদ্দেশ্য মানুষকে শেখানো। এ লক্ষ্যে ২০১২ সাল থেকে আইটি নিয়ে কাজ করা শুরু। শুরুতে ব্লগে লেখালেখি, এরপর ইউটিউব কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে ভিডিও তৈরি করতে থাকেন। বর্তমানে সোহাগ ৩৬০ ও বেসিক ভাই নামে জনপ্রিয় দুটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে তার।
এসব চ্যানেলে প্রতিনিয়ত গ্যাজেট রিভিউ, টিপস অ্যান্ড ট্রিক্স, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইউটিউবের খুঁটিনাটি বিষয়ে ভিডিও আপলোড করছেন। ফলে একদিকে মানুষ যেমন প্রযুক্তি সম্পর্কিত নিত্যনৈমিত্তিক সমস্যা, বিভিন্ন হ্যাক-কৌশল শেখার সুযোগ পাচ্ছে, অন্যদিকে বেসিক ভাই চ্যানেলের মাধ্যমে তিনি পৌঁছে যাচ্ছেন সেসব মানুষের দোরগোড়ায়— যারা প্রযুক্তিতে অজ্ঞ কিংবা সবসময় এসব থেকে দূরে থাকতে চায়।
এ প্রসঙ্গে সোহাগ বলেন, ‘সাধারণত নির্দিষ্ট একটা গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে মানুষ তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। কিন্তু আমার কাজটা প্রযুক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং প্রযুক্তিতে অজ্ঞ কিংবা যাদের প্রযুক্তিতে খুব বেশি ধারণা নেই তাদের নিয়েও। এ কারণে অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম আমি।’
সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে কাজ করার ফলে গণমানুষের একটা বড় সমর্থন তথা ভালোবাসা সবসময় ছিল সোহাগের পাশে। ইউটিউব থেকে পাওয়া সিলভার ও গোল্ডেন প্লে বাটন তারই বহিঃপ্রকাশ। তবে এবার তিনি ছাড়িয়ে গেছেন সবকিছুকে। নিজের অনন্য ও জনমুখী কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন রাইজিং ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। গত ১৬ জানুয়ারি রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ ক্যারিয়ার কার্নিভাল-২০২১’-এ সর্বমোট ১০ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এতে ‘এপিটমি ইন ইনফ্লুয়েন্স’ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড জিতেন তরুণ ডিজিটাল উদ্যোক্তা সোহাগ মিয়া। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির হাত থেকে তিনি এই সম্মাননা গ্রহণ করেন।
সোহাগ মিয়া বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর হাত থেকে অ্যাওয়ার্ড পাওয়াটা নিঃসন্দেহে অনেক গর্বের। তিনি যেভাবে উৎসাহ অনুপ্রেরণা দিয়েছেন সেটি সবচেয়ে ভালো লেগেছে।’ ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যম দিয়ে শুরু হলেও ভবিষ্যতে নিজের কার্যক্রমকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান সোহাগ। দাঁড় করতে চান টেন মিনিট স্কুলের মতো প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে তিনি সবার মাঝে আইটি বিষয়ক জ্ঞান পৌঁছে দিতে চান।