স্বপ্ন করেছেন সত্যি, ভক্তদের দিয়েছেন স্বস্তি। তিনি ফুটবলের এক কিংবদন্তি, সদ্য বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসি। নানান সময়ে তার ভক্তদের দেখা যায় তাকে জড়িয়ে নানান কিছু করতে। তবে একজন বাংলাদেশি ব্রাজিলিয়ান সমর্থক বাংলাদেশ চট্টগ্রাম নৌবাহিনী কলেজ হতে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করা মুহাম্মদ বোরহান উদ্দিন নিজের ক্যানভাসে আরবি হরফে তৈরি করলেন মেসির মুখাবয়ব।
স্কেচ এবং ক্যালিগ্রাফি দুটোতেই সমানভাবে পারদর্শী তিনি। যাকে শিল্পের ভাষায় ‘ক্যালিগ্রাম’ বলা হয়। যদিও বাংলাদেশে এ ধারার কাজ করা হয় না বললেই চলে, বিশেষ করে আরবি হরফে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এ ধারার কাজের প্রচলন বেশ। সব মিলিয়ে ভিন্ন ধাঁচের কাজ করার চিন্তাতেই মেসির এ ‘পোট্রেট ক্যালিগ্রাফি’ বা ক্যালিগ্রামটি করেন তিনি।
প্রতিটি ক্যালিগ্রাম লম্বা একটি প্রসেসের মাধ্যমে করা লাগে, কিছুক্ষণ রঙ করা আবার কিছুক্ষণ রঙ শুকানো— এক রঙ থেকে আরেক রঙ বানানো, পাশাপাশি বিশ্রাম তো আছেই। এ কাজটি করতে তার পাঁচ দিন আর ঘণ্টার হিসেবে আনুমানিক ৩২-৩৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগে।
ক্যালিগ্রাফিতে যুক্ত হওয়া সম্পর্কে মুহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘বাটন মোবাইলে ফেসবুকে বিভিন্ন ছবি ছবি আঁকার অনুপ্রেরণা। বিভিন্নজনের স্কেচ করার চেষ্টা করতাম। পারফেক্টলি একটা চোখ এঁকেছিলাম ২০১৭ সালে। এভাবেই ছবি আঁকার পাশাপাশি ক্যালিগ্রাফি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু ২০২০ সালে। আকস্মিকভাবে ক্যালিগ্রাফির ভাবনা চেপে বসে। কিন্তু কিভাবে শুরু করব তা বুঝে ওঠতে পারছিলাম না। ২০২০ সালে করোনা পরবর্তী সময়ে মাহবুব মুর্শিদ স্যার চট্টগ্রামে ক্যালিওগ্রাফির কর্মশালা আয়োজন করেন। ছুটে যাই সেখানে। সেই কর্মশালার মাধ্যমেই আমার ক্যালিগ্রাফি জগতে পা রাখা।’
সুন্দর লেখার প্রতি ছোটবেলা থেকেই প্রবল আগ্রহ ছিল তার। এখান থেকেই মূলত ক্যালিগ্রাফির প্রতি ভালোবাসা। আইডল বলতে নির্দিষ্ট কেউ না থাকলেও প্রতিষ্ঠিত ক্যালিগ্রাফারদের কাজ দেখেই অনুপ্রাণিত হন। এক সময় শখের বশে করলেও বর্তমানে প্রফেশনালি ক্যালিগ্রাফি করে যাচ্ছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি চর্চার মাধ্যমে মাসে আয় করেন প্রায় ১০ হাজার টাকা। এছাড়াও রিয়লিজম, হাইপার রিয়লিজম স্কেচ নিয়ে কাজ করছেন প্রায় ৫ বছর ধরে। ‘Graphacoal Arts’ নামক ফেসবুক পেজে নিজের কাজগুলো শেয়ার করেন প্রতিনিয়ত।
এ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান, পরিকল্পনা তো আছে অনেক, পাশাপাশি প্রতিবন্ধকতাও সমান্তরাল। একটা নর্মাল সেন্স হচ্ছে আমাদের দেশে ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্টের অভাবে কত সুন্দর সুন্দর কাজ এক্সিকিউট হচ্ছে না। টাকায় শিল্পের সার্টিফিকেশন পাওয়া যাচ্ছে অহরহ, হেরে যাচ্ছেন প্রকৃত শিল্পীরা।