বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

রাবি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংঘর্ষের সূত্রপাত: দাবি ৮ ছাত্র সংগঠনের

আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৩, ২১:৫০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে হয়েছে বলে দাবি ৮ ছাত্র সংগঠনের। মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংগঠনগুলো এমনটাই দাবি করেছে।

এই সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও নাগরিক ছাত্র ঐক্য। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনগুলো দাবি করেছে, সেদিন আল আমিন আকাশ নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাস কন্ডাক্টরের বাকবিতণ্ডায় তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আকাশ ও তার বন্ধুদের ওপর মারমুখী হলে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া উপস্থিত হয়। তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ব্যবসায়ীদের ওপর চড়াও হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। এরপরই বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, রড, হকিস্টিক, স্ট্যাম্প নিয়ে বিনোদপুর গেটে এসে জড়ো হয়। ছাত্রলীগ কর্মীদের এ সংঘর্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হিসেবে প্রচার হলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় বিনোদপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে মহানগর ছাত্রলীগ নেতা অনিক মাহমুদ বনির নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। স্থানীয়রা পুলিশ বক্স ও আশেপাশের কিছু দোকানেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঘটনা এ পর্যন্ত গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়,  রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপাচার্য ঘটনাস্থলে গিয়ে হয়ে কোনো সমাধান না করেই ফিরে আসেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ার শেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। ফলে অসংখ্য শিক্ষার্থী আহত হয়। ১২ মার্চ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ের চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে পুনরায় সহিংস করে তোলার জন্য  মুন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জান্নাত জারা-এর নেতৃত্বে রেল লাইনের উপর আগুন জ্বালিয়ে চারুকলার রেলগেট অবরোধ করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিনোদপুরের সাধারণ জনগণ। বর্তমানে এ এলাকায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা চরম উৎকণ্ঠা ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। 

এসময় তারা ৬টি দাবি করেন। দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সর্বত্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ ও উপাচার্যকে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, আহত শিক্ষার্থীদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে, ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব ও সিট বাণিজ্য বন্ধ করে শতভাগ আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে রাকসু সচল করতে হবে।

ইত্তেফাক/এবি/পিও