বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হকারদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল

সরকারি পুকুর ভরাট করে মার্কেট তৈরির পাঁয়তারা

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০৪:০৩

সাভারে অনুমতি না নিয়েই সরকারি পুকুর ভরাট করে স্থানীয় হকার্স লীগের নেতারা হকার্স মার্কেট তৈরির কাজ শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাভারের প্রাণকেন্দ্র বাজার বাসস্ট্যান্ডের পাশেই এ ভরাট কাজ চলছে পুরোদমে। সরকারি সম্পত্তি বন্দোবস্ত না নিয়েই বালু ফেলে ভরাট কার্যক্রম চললেও প্রশাসন রয়েছে নিশ্চুপ। অভিযোগ রয়েছে, হকার্স মার্কেট নির্মাণকে কেন্দ্র করে একটি মহল মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিতে তৎপর। 

জানা গেছে, বাজার বাসস্থানসংলগ্ন পুকুরটির পরিমাণ ১১২ শতাংশ। ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উত্তরণ সমবায় ফাউন্ডেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠানের নামে  বন্দোবস্ত বা লিজ দেওয়া হয়। কিন্তু গত কয়েক মাস পূর্বে পুকুরের পাশে ‘ডা. এনামুর রহমান হকার্স মার্কেট’ নামক একটি সাইনবোর্ড টাঙানো দেখা যায়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে তা নামিয়ে ‘সাভার হকার্স মার্কেট’ নামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে বালু ফেলে ভরাট কার্যক্রম শুরু করা হয়। জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কোনো পুকুর, জলাশয়, নদীখাল ভরাট করা বেআইনি। 

তবে উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এ জায়গা অদ্যাবধি বন্দোবস্ত বা লিজ দেওয়া হয়নি। তবে  দীর্ঘদিন ধরে পুকুরের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পুকুরের আংশিক ভরাট হয়ে যাওয়ায় শ্রেণি পরিবর্তন করে জলমহালের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারি জমি প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই হকার্স লীগের নেতারা ভরাট করছে। এজন্য তারা হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক হকার্স বলেন, তাদের কাছ থেকে (ফুটপাতে বসা হকার) প্রতিদিন পুকুর ভরাট কার্যক্রমের জন্য ২০ টাকা করে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। অনেকের কাছ থেকে এককালীন ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করারও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, হকার্স লীগের দুটি শাখা সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সরকারি পুকুর ভরাটের বিষয়ে সাভার শাখার সেক্রেটারি লিটন খান বলেন, বাজার বাসস্ট্যান্ড যানজটমুক্ত রাখার স্বার্থে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ পুকুরটি ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এতে প্রশাসনের সম্মতি রয়েছে। 

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি এ পুকুরটি আংশিক ভরাট হয়ে গেছে। পুকুরের শ্রেণি পরিবর্তনসহ জলমহালের তালিকা থেকে বাদ দিতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।  প্রস্তাব অনুমোদন হলে খাসজমি হিসাবে হকারদের মধ্যে বন্দোবস্ত দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইত্তেফাক/এমএএম