মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ক্যালটেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অনন্যা

আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ২৩:০৫

গত ১৬ বছরে প্রথমবার কোনো বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সুযোগ পেয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে। সব জল্পনা কল্পনা ছাপিয়ে সানজিদা নুসরাত অনন্যা এ অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। অনন্যা তার অনন্য এ কৃতিত্বে ছাড়িয়ে গেছেন অন্য সবাইকে। তিনি তার স্বপ্নজয়ের গল্প শুনিয়েছেন ইত্তেফাক প্রজন্মকে।

অনন্যার গল্পটা সবার মতো না, গল্পটা ব্যতিক্রম। সারাজীবন বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন দেখে বড় হওয়া অনন্যা বুয়েটে আবেদন করার সুযোগই পাননি।

অনন্যার জন্ম সিরাজগঞ্জে, কিন্তু বেড়ে উঠা টাঙ্গাইলে। তিনি পড়াশোনা করেছেন টাঙ্গাইলের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ ও ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজে। ২০২১ সালে এইচএসসি পাস করেন। ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন অলিম্পিয়াড করে বেড়ে উঠেন তিনি। স্কুলে থাকাকালে বাংলাদেশ ম্যাথমেটিকাল অলিম্পিয়াড, কলেজে থাকাকালে বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ন্যাশনাল ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন তিনি, স্বপ্ন ছিল বুয়েটে পড়ার।

কলেজ থেকেই বুয়েটের প্রিপারেশনের সুবাদে ফিজিক্স বই, উদ্ভাস প্রশ্নব্যাংক, রেস্নিক, হ্যালিডে, ফিজিক্স ওয়ালা সহ সব ফিজিক্স, রসায়ন, ম্যাথ বই শেষ করেন। টেস্ট পরীক্ষার পর ঢাকা এসে কোচিংয়ের জন্য ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি বুয়েটের ফর্মই তুলতে পারেননি।

এরপর সবার থেকে অনন্যা মনস্থির করেন দেশে কোথাও আর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিবেন না। পড়াশোনা করবেন দেশের বাইরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে ভালো অংশগ্রহণ থাকায় তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সামার প্রোগ্রামে আবেদন করেন, যেটি ফিজিক্স বিষয়ক ছিল। সেখানে স্ট্যানফোর্ডের প্রফেসরের অনুপ্রেরণার পর রিসার্চে আগ্রহী হন তিনি। বাবা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে থিসিস করার সুবাদে তার বাবার সাথে রিসার্চ কাজে যুক্ত হন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এমন অনেক সময় আছে একটানা ১১ দিন না ঘুমিয়ে ছিলাম। দুপুর হলে ২/৩ ঘণ্টা ঘুমাতাম। কিন্তু রিসার্চ জিনিটা ছিল নেশার মতো, যেকোনো বিষয়েই রিসার্চ করা শুরু করতাম।’

গণিতে অনেক আগ্রহ থাকায় এক পর্যায়ে তিনি বিভিন্ন গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে শুরু করেন। SAT পরীক্ষায় ১৬০০-এর মধ্যে ১৫৬০ পাওয়া অনন্যা ২০ হাজার আবেদনকারীর একজন হিসেবে ক্যালটেকে পড়ার সুযোগ পান।

পরবর্তী স্বপ্ন নিয়ে জানতে চাইলে অনন্যা জানান, পরবর্তী ইচ্ছা ক্যালটেকে আমার ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর নোবেল জয়ী ড. ফ্রান্সেস আরনোল্ডের সাথে কাজ করার। এছাড়াও নাসার জেপিএল ক্যালটেকের হওয়ায় নাসায় কাজ করার ইচ্ছাও আছে।

ইত্তেফাক/এসটিএম