পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুর ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা সহকারী সুবীর কুমার পালের বিরুদ্ধে বিসিএস না হয়েও জন্ম তারিখ নির্ধারণীপ্রত্যয়ন পত্রে সত্যায়িত করা সহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
জানা যায়, মহিপুরের নজীবপুর গ্রামের রাবেয়া বসরী নামের এক নারীর জন্ম তারিখ নির্ধারণীর প্রত্যয়ন পত্রে তিনি সত্যায়িত করেছেন। যা তার এখতিয়ার ভুক্ত নয়। তাছাড়া এমবিবিএস না হয়েও নামের আগে ডাক্তার লেখা, হাসপাতালে এমবিবিএস ডাক্তার থাকা সত্বেও আলাদা চেম্বারে রোগী দেখা, রোগীদের কাছ থেকে একশত টাকা ভিজিট নেওয়া এবং অপ্রয়োজনে তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা, সামান্য জ্বর হলেই রোগীদের টু-গ্রাম (Crftriaxone) ইনজেকশন লিখে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সুবীর কুমারের বিরুদ্ধে।
ঔষধ কোম্পানির পক্ষ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে মানহীন ঔষধ প্রেসক্রাইভ করা, ক্লিনিক থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন গ্রহণ করে রোগীদের তাদের চেম্বারে পাঠানো এবং যারা তাকে চাহিদা অনুযায়ী কমিশন দেয় না তাদের ক্লিনিকে রোগী না পাঠানো, হাসপাতালের পুকুর লিজ দিয়ে অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ ৭ বছর উপরস্থ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি এক জায়গায় এতো বছর রয়েছেন এবং এক তরফা আধিপত্য বিস্তার করেছেন।
মহিপুরের নজীবপুর গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী জালাল ঘরামী জানান, দুই বছরের জন্য সুবীর বাবুর কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকায় হাসপাতালের পুকুর লিজ নেয় সে এবং তার সহযোগী ইকবাল। তাছাড়া তাদের সাথে ব্যবসায় অংশীদার হিসেবেও রয়েছেন সুবীর।
নিজামপুর গ্রামের ফরীদ ফকির জানান, সামান্য রোগের সমস্যা নিয়ে গেলেও সে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়। যা করানোর সক্ষমতা থাকেনা তাদের।
মহিপুর নূরানী হাফেজী মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আনোয়ার জাহিদ জানান, হাসপাতালে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রোগী নিয়ে গেলে তাকে একশত টাকা করে ভিজিট দেওয়া লাগে। আর সে দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে প্রতারিত করছে।
অভিযুক্ত সুবীর কুমার পাল বলেন, আমি ভুল বসত জন্ম তারিখ নির্ধারনী ফর্মে স্বাক্ষর করেছি। যা আমার এখতিয়ারে নেই। তাছাড়া অন্য সকল অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন এবং সাংবাদিকদের এ বিষয়ে নিউজ না করার অনুরোধ করেন।
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় বলেন, জন্ম তারিখ নির্ধারণীতে সত্যায়িত করার তার কোনো এখতিয়ার নেই। এ বিষয়ে তাকে শোকোজ করা হয়েছে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. কবীর হোসেন বলেন, অফিসিয়ালভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তাছাড়া পুকুর লিজ দেওয়ার ব্যাপারে তারা অবগত নয়। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের করা হয়েছে।