শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জি কে প্রকল্পের ২ হাজার ব্রিজ-কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ

আপডেট : ০৫ জুন ২০২৩, ০৫:০১

জি কে প্রকল্পের খালের ওপর নির্মিত প্রায় ২ হাজার ব্রিজ-কালভার্ট দুর্বল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব ব্রিজ কালভার্টের ওপর দিয়ে চলছে ভারী ভারী ট্রাক। ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্রিজের দুই পাশে ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না ট্রাক চলাচল।

বিগত শতকে ষাটের দশকে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলায় ১৩টি উপজেলায় জি কে প্রকল্প বাস্তবায়নকালে পানি সেচের জন্য খালগুলো খনন করা হয়। জি কে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চার জেলায় ১৯৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রধান সেচ খাল, ৪৬২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে শাখা সেচ খাল, ৮৯৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের উপ-শাখা সেচ খাল ও  ৯৭১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ড্রেনেজ খাল রয়েছে। গ্রামের মানুষ ও যানবাহন পারাপারের জন্য বিভিন্ন স্থানে খালের ওপর ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। গরু, মহিষের গাড়ি ও তুলনামূলক বড় ব্রিজগুলো সাত-আট টন মাল বহনের উপযোগী ট্রাক চলাচলের হিসাব করে তখন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর ৬০-৬৫ বছর পেরিয়ে গেছে। এসব ব্রিজ-কালভার্টের ধারণক্ষমতা কমে গেছে। পিলার ও বিমে ফাটল ধরেছে। বর্তমানে এসব ব্রিজের ভারী পণ্যবাহী ট্রাক (১০ চাকার ৪০ টন) পারাপারের ক্ষমতা একেবারেই নেই। তবুও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভারী ভারী পণ্যবাহী ট্রাক চলছে। শৈলকুপায় কুমার নদের ওপর ১৯৭০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মিত ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ ঘোষাণা দিয়ে ভারী ট্রাক পারাপারে নিষেধাজ্ঞার নোটিশ দিয়েছেন। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। সম্প্রতি শৈলকুপা উপজেলার চরপাড়ায় জি কে খালের ব্রিজের ওপর দিয়ে বালুবোঝাই ১০ চাকার ট্রাক পার হওয়ার সময় ব্রিজ ধসে পড়েছে। ট্রাকও খালের মধ্যে পড়ে গেছে। যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে ১০ গ্রামের মানুষের। ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শরাতলা ও বেলতলায় জি কে খালের ওপর দুটি ব্রিজ ধসে পড়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। শৈলকুপার গোলকনগর গ্রামে একটি ব্রিজের মাঝখানে ধসে পড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে দুর্ঘটনায় দুজন মারা গেছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন বলে এলাকাবাসী জানান। মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ এলাকায় কয়েকটি ব্রিজের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং জি কে প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুল হামিদ জানান, জি কে প্রকল্পের খালগুলোর ওপর ২ হাজার ১৮৪টি ব্রিজ-কালভার্ট আছে। এগুলো ১৯৬০-১৯৬৫ সালে নির্মিত। তখন সাত-আট টন মালবাহী ট্রাক পারাপারের উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়। বর্তমানের ১০ চাকার ভারী (৪০ টন) ট্রাক বহনের ক্ষমতা এগুলোর নেই। তিনি জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ও এলজিইডি তাদের রাস্তার ওপর জি কে খালের ওপর নতুন ব্রিজ নির্মাণ করছে। তবে এর সংখ্যা কম। পানি উন্নয়ন বোর্ড জি কে খালের ওপর ৪৪৩টি ব্রিজ-কালভার্ট পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। জি কে প্রকল্প পুনর্বাসনের জন্য ২৪৭২ কোটি টাকার ডিপিপি অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পাশ হলে এবং অর্থ বরাদ্দ এলে কাজ শুরু হবে।

 

ইত্তেফাক/ইআ