বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, শিল্পকলা এবং গণিত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য কাজ করছে ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াড। এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা, ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং নারী ফুটবল দলের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার।
ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেন, 'ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াড ২০২৩ সালের এমন সম্মানজনক এক প্রতিযোগিতার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে পেরে সত্যিই আমি গর্বিত। এখানে প্রযুক্তি, গণিত, বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টস থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে। তরুণ মেধার বিকাশে এমন এক আয়োজনে আমরা সবাই যুক্ত হই এবং নতুন কিছু সৃষ্টি করি যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে পরিচিত করে তুলতে পারবো আমরা।'
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও আই-টেসারেক্ট টেকনোলজির উদ্যোগে ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন লেভেলের শিক্ষার্থীরা মোট আটটি বিভাগে এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
জুলাই মাসে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির উপস্থিতি উদ্বোধন করা হয় স্টিম অলিম্পিয়াডের রেজিস্ট্রেশন। এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৪৮৯ জন শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে। ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন লেভেলের শিক্ষার্থীরা মোট আটটি বিভাগে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অংশ গ্রহণ করতে তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে https://nationalsteamolympiad এ লিংকে লগইন করে। এই ওয়েব সাইটে মিলবে বিস্তারিত তথ্য। রেজিস্ট্রশনের জন্য রয়েছে আর মাত্র ১৪ দিন।
এই অলিম্পিয়াডে দলীয় ভাবে অংশগ্রহণের জন্য রয়েছে 'প্রজেক্ট' ভিত্তিক প্রতিযোগিতা যার চ্যাম্পিয়নদের জন্য প্রাইজ মানি হিসেবে রয়েছে ২ লক্ষ টাকা পুরস্কার। প্রথম রানার-আপ ও দ্বিতীয় রানার-আপ হিসেবে প্রাইজমানি রয়েছে যথাক্রমে ১ লাখ ও ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও থাকছে বিনামূল্যে আই-ট্রেজারেক্টের কোর্স সার্টিফিকেট ও অন্যান্য সুবিধা।
অন্যদিকে অলিম্পিয়াড কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে চ্যাম্পিয়নের জন্য থাকছে ৫০ হাজার টাকার প্রাইজমানি, প্রথম রানার আপের জন্য ৩০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় রানার আপের জন্য ২০ হাজার টাকা পুরস্কার। এ ছাড়াও সার্টিফিকেট ও আই-ট্রেসারেক্টের কোর্স সহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন তারা।
প্রতিযোগীদের প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী, ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী, কলেজ শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, পলিটেকনিক শিক্ষার্থী এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।
তাদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের বিষয় হিসেবে রয়েছে- আইসিটি এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি, ব্লকচেইন এবং ক্লাউড কম্পিউটিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টস এবং ক্রাফটিং, এআই, রোবোটিক্স এবং বিগ ডাটা, বিজ্ঞান, গণিত এবং টেকনোলজি।
এই আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আমাদের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধাকে কাজে লাগানোর উপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষার্থীরা যাতে ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি বাস্তব জীবনের কার্যক্রম এবং পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা হাতেকলমে অর্জন করার সুযোগ পেতে পারে সে লক্ষ্য পূরণে ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের আয়োজন একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প বাস্তবায়নে আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীরাই প্রধান কারিগর।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ও স্টিম অলিম্পিয়াডের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ রূপকল্প বাস্তবায়নের উপযোগী করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানবিক ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্টিম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টস, ম্যাথম্যাটিকস) শিক্ষার বিকল্প নেই।
প্রায় ৭ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা স্টিম অলিম্পিয়াড আশা করছে ২ লাখের বেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এবং সরাসরি ৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রথমবারের মত শুরু হবে তাদের পথ চলা। ধীরে ধীরে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যুক্ত হবে এই স্টিম অলিম্পিয়াডের সঙ্গে।